BK Murli 3 April 2016 In Bengali
০৩-০৪-২০১৬ প্রাতঃমুরলী ওম্ শান্তি " অব্যক্ত-বাপদাদা " রিভাইস : ২৯-০৩-৮১ মধুবন
জ্ঞানের সার -- 'আমি আর আমার বাবা'
বাপদাদা সকল বাচ্চাদেরকে সম্পন্ন স্বরূপ বানানোর জন্য রোজ রোজ নানান ভাবে পয়েন্টস দিয়ে যেতে থাকেন। সকল পয়েন্টসের সারই হল -- সব কিছুকে সার-এ মিলিয়ে দিয়ে বিন্দুতে নিয়ে এসো। এই অভ্যাস নিরন্তর চলে ? যে কোনো কাজ করতে করতে স্মৃতিতে এটা থাকে যে আমি জ্যোতির্বিন্দু এই কর্মেন্দ্রীয়ের দ্বারা এই কাজটি করাচ্ছি। এই প্রথম পাঠটি স্বরূপে এনেছো ? এটাই আদি এবং এটাই হল অন্ত। স্বরূপ হয়েছো ? বিস্তারকে গুটিয়ে আনার জন্য চাই এক সেকেন্ডের অভ্যাস । বিস্তারে যাওয়াটা যতটা সহজ ততটাই সার স্বরূপে আসা -- এটা সহজ অনুভব হয় ? সার স্বরূপে স্থিত হয়ে বিস্তারে এলে বিস্তারের কোনো প্রকারেরই আকর্ষণ অনুভব হয় না । বিস্তারকে দেখে, শুনে বা বর্ণনা করবার সময়ও যেন একটি খেলা বলে অনুভব হবে। এমন অভ্যাস যেন সদা বজায় থাকে। একেই 'সহজ স্মরণ' (ইয়াদ) বলা হয়।
জীবনের প্রতিটি কাজে দুটি শব্দ সব সময় কাজে আসে, তা সে জ্ঞানেই হোক বা অজ্ঞানে। কোন্ দুটি ? 'আমি আর আমার' --এই দুটি শব্দ হল জ্ঞানেরও সার। আমি হলাম জ্যোতির্বিন্দু বা আমি হলাম শ্রেষ্ঠ আত্মা । আমি হলাম ব্রহ্মাকুমার বা কুমারী। আর আমার তো এক বাবা, আর কেউ নেই ।"আমার বাবা" -- এতেই সব কিছু এসে যায়। আমার বাবা -- এই কথাটির অর্থই হল আমি সব উত্তরাধিকার পেয়ে গেলাম । তো এই 'আমি আর আমার' এই শব্দ দুটি পাক্কা আছে তো ! 'আমার বাবা' এই কথাটি বললেই অনেক রকমের আমার মিশে যায়। তো দুটি শব্দকে স্মৃতিতে আনা কঠিন না সহজ ? আগেও এই দুটি শব্দ বলতে, এখনও এই দুটি শব্দ বলো, কিন্তু কত অন্তর বলো তো ? এ তো ছোট বাচ্চারাও মনে রাখতে পারে । তোমরা তো হলে নলেজফুল। তো নলেজফুল দুটি শব্দকে মনে রাখতে পারবে না -- তা কি হতে পারে ? এই দুটি শব্দেই মায়াজিৎ, নির্বিঘ্ন, মাস্টার সর্বশক্তিবান হয়ে উঠতে পারো। দুটি শব্দ ভুললেই তো মায়া হাজার রূপ নিয়ে এসে উপস্থিত হয় । আজ একটি রূপ নিয়ে আসে, তো কালকে অন্য রূপ নিয়ে । কেননা মায়ার 'আমার আমার'-- হল বেশ লম্বা চওড়া । আর আমার বাবা তো একটিই। এই এক-এর সামনে মায়ার হাজার রূপও সমাপ্ত হয়ে যায় । এমন মায়াজিৎ হতে পেরেছো ? মায়াকে তালাক দিতে এত টাইম কেনো লাগাও। এ তো মাত্র সেকেন্ডের সওদা। তাতে বছর লাগিয়ে দাও কেন ? ছাড়লে তবে তো ছুটবে ( ছোড়ো তো ছুটো)। শুধুমাত্র আমার বাবা, তারপর তাতেই মগ্ন হয়ে যাবে। বাবাকে বারংবার এই পাঠটিই পড়াতে হয় । অন্যদেরও তো পড়াও, তাও নিজে ভুলে যাও। অন্যদের বলো, স্মরণ করো স্মরণ করো। আর নিজে তবে কেন ভুলে যাও ? কোন্ তারিখটি ফিক্সড করবো বলো, যেদিন থেকে অভুল হয়ে যাবে ? সকলের একটাই ডেট হবে নাকি আলাদা আলাদা হতে পারে। যত জন এখানে বসে আছো তাদের একই ডেট হতে পারে। এরপর তাহলে আর কোনো কথা থাকবে না । শুভ সংবাদ শোনাতে পারো, কিন্তু সমস্যার কথা বলবে না । যেমন কোনো প্রদর্শনী করো তো উদ্ঘাটন কাঁচি দিয়ে ফুলের মালা কেটে করাও, তো আজ কি করবে ? নিজেই কাঁচি হাতে তুলে নেবে। দুই দিক যখন মিলিত হয়ে থাকে, তখন কোনো জিনিস কাটা যায়। তো জ্ঞান এবং যোগ এই দু'য়ের মিলনে মায়ার সমস্যার বন্ধন সমাপ্ত হয়ে গেছে, এই সুখবর শোনাও। আজ হল এই সমস্যার বন্ধনকে কাটবার দিন। এক সেকেন্ডেরই তো ব্যাপার না ? প্রস্তুত তো তোমরা ? যারা ভেবে চিন্তে তারপরে বন্ধন কাটবে, তারা হাত তোলো। তবে তো সব ডবল বিদেশী তীব্র পুরুষার্থীর লিস্টে এসে যাবে। শোনার সময়ই সকলের চেহারা চেঞ্জ হয়ে গেছে । তো সদা কালের জন্য যদি হয়ে যায় তাহলে কি হবে ? চলতে ফিরতে সব অব্যক্ত বতন ফরিস্তাদের দেখা যাবে। তারপর সঙ্গম যুগ ফরিস্তাদের যুগ হয়ে যাবে। এই সকল ফরিস্তাদের দ্বারা দেবতারাই দৃষ্টি গোচর হবে। ফরিস্তাদের জন্য দেবতারাও প্রতীক্ষা করছে। তাঁরাও দেখছেন যে আমাদের আসবার জন্য যোগ্য স্টেজ প্রস্তুত । ফরিস্তা এবং দেবতা উভয়ের মিলন শেষ মুহূর্তে হবে। দেবতারা তোমাদের সব ফরিস্তাদের জন্য বরণমালা নিয়ে প্রতীক্ষা করছেন। ফরিস্তাদের বরণ করবার জন্য । তোমাদের জন্য দেব পদ অপেক্ষা করছে। দেবতাদের প্রবেশ তো সম্পন্ন শরীরেই হবে তাই না ! তারা প্রতীক্ষা করছে, কখন এরা ১৬ কলা সম্পন্ন হবে আর বরণমালা পড়বে। কত কলা তৈরী হয়েছে ? সূক্ষ্ণ বতনে সম্পন্ন ফরিস্তা স্বরূপ এবং দেবতাদের মিলনের দৃশ্য খুবই সুন্দর । ফরিস্তার পরিবর্তে যখন পুরুষার্থী স্বরূপ হয়ে যায় তখন দেবতারাও দূর থেকে দেখতে থাকেন। সময় অনুসারে কাছে আসতে থাকলেও সম্পন্ন না হওয়ার কারণে কাছে আসতে পারছেন না । সেই ডেটটা কবে আসবে ? তারিখ ফিক্সড হলে যেমন লক্ষ্য তেমনি লক্ষণ এসে যাবে। সেই ডেট তো আজকে ফাইনাল হয়ে গেল। তো এটাও হয়ে গেল তো ? কেননা নির্বিঘ্ন ভব-র স্টেজ তো কিছু সময় ধরে একভাবে থাকা দরকার । তবেই বহুকালের নির্বিঘ্ন রাজত্ব করতে পারবে। এখন সমস্যার এবং সমাধানেরও নলেজফুল হয়ে গেছো । যে কথাটা অন্যকে জিজ্ঞাসা করো, তার আগে নলেজের ভিত্তিতে বুঝতেও কি পারো যে, এটা এমন হওয়া উচিত ? অন্যকে দিয়ে পরিশ্রম করানোর চেয়ে, সময় নষ্ট করবার পরিবর্তে, সেই নলেজের লাইট এবং মাইটের ভিত্তিতে সেটাকে সেকেন্ডে সমাপ্ত করে এগিয়ে যাও না কেন? আসলে কি হয় মায়া দূর থেকে এমন ছায়া ফেলে যে তাতে নির্বল বা দুর্বল হয়ে পড়ো। ঠিক সেই মুহূর্তে কানেকশন ঠিক করো। কানেকশন ঠিক করলে মাস্টার সর্বশক্তিবান স্বভাবতই হয়ে যাবে।
মায়া তো কানেকশনকেই ঢিলা করে দেয়, সেটারই শুধু খেয়াল রাখো। কানেকশন কোথায় ঢিলা(Loose) হল সেটা বুঝে নাও। যার কারণে দুর্বলতা বা নির্বলতা এসেছে । কেন হয়েছে, কি হয়েছে -- এ সব ভেবো না । কি, কেন-র পরিবর্তে কানেকশনটাই ঠিক করো, তাহলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। সহযোগিতার জন্য সময় নিতে হলে নাও। যোগের বায়ুমণ্ডল ভাইব্রেশন বানানোর জন্য সহযোগিতা নিতে হলে নাও, তবে ব্যর্থ আলোচনা, বিস্তারে যাওয়া এ সবের মধ্যে থেকো না । ওটা হবে শুভ চিন্তন, আর এটা তাহলে হয়ে যাবে পরচিন্তন। সব সমস্যারই মূল কারণ হল কানেকশন ঢিলা( Loose) হয়ে যাওয়া । এটাই হল ব্যাপার। সবই পেয়ে যাবে কেবল যদি কানেকশনকে ঠিক করো। তাহলেই সকল শক্তি তোমার সামনে পিছনে ঘুরতে থাকবে। কোথাও যাওয়ারই সময় পাবে না। বাপদাদার সামনে বসে যাও তো কানেকশন জুড়বার জন্য বাপদাদা তোমাদের সহযোগী হয়ে যাবে। যদি এক দুই সেকেন্ড অনুভব না হয় তাহলেও বিভ্রান্ত ( Confused) হবে না । যেটুকু কানেকশন ভেঙে গেল তাতে যদি সেকেন্ড মিনিটও লেগে যায়, তবুও হতাশ হবে না । নিশ্চয়ের ভিতকে ( Foundation) নাড়িয়ো না, বরং আরও বেশী ফাউন্ডেশনকে পাক্কা করো। বাবাকেও নিশ্চয়ের বন্ধনে বাঁধতে পারো। তবে বাবাও যেতে পারবে না । এতটা অথরিটি এই সময় বাচ্চাদের রয়েছে । অথরিটিকে, নলেজকে ব্যবহার করো। পরিবারের সহযোগিতাকে ব্যবহার করো। অভিযোগ নিয়ে যেও না, সহযোগিতারও ডিমান্ড কোরো না । প্রোগ্রাম সেট করো, দুর্বল হয়ে যেও না এখান থেকে । কি করবো, কীভাবে করবো --ঘাবড়ে যেও না । সম্বন্ধ ও সহযোগিতার ভিত্তিতেই যাও। বুঝেছো তো -- সেকেন্ডে সিঁড়ি নীচে, সেকেন্ডে উপরে -- এই সংস্কার চেঞ্জ করো। বাপদাদা দেখেছেন যে ডবল বিদেশী নীচে খুব তাড়াতাড়ি যেমন নেমে যায়, তেমনি তাড়াতাড়ি উপরেও উঠে যেতে পারে । খুব নাচতে পারে, কিন্তু ঘাবড়ে যাওয়ার ডান্সও ভালোই করে। এখন এটারও পরিবর্তন করো। মাস্টার নলেজফুল হয়ে এরকম ডান্স কেন করো ?
সততা এবং পরিচ্ছন্নতার লিফ্টের কারণে অনেক এগিয়েও যাচ্ছে। এই বিশেষত্বে তো এক নম্বরে । এই বিশেষত্বটিকে দেখে বাপদাদা খুশী হন। এখন কেবল যদি ঘাবড়ানোর ডান্সকে ছাড়ো তাহলে আরও তীব্র গতিতে এগিয়ে যেতে পারবে। অনেক আগের নম্বর নিয়ে যেতে পারবে। এটা তো সকলের জন্যই পাক্কা যে 'শেষে থাকলেও দ্রুত যেতে পারবে, আর দ্রুত গেলে প্রথমও হতে পারবে' ( লাস্ট সো ফাস্ট, ফাস্ট সো ফার্স্ট')। খুশীর ডান্স যত খুশী করো। বাবার হাত ছেড়ে দাও বলে বাবারও ভালো লাগে না, বাবা ভাবেন যে এ কোথায় যাচ্ছে ? বাবার হাতে হাত থাকলে ঘাবড়ানোর ডান্স হবেই না। মায়ার হাত ধরো, তবেই তো এই ডান্স হয় । বাবা আমাদেরকে এত ভালোবাসেন যে অন্য কারো সাথে চলে যাওয়া বাবার ভালো লাগে না । বাবা জানেন যে এত বিভ্রান্ত হয়ে তারপর বাবার কাছে এসে পৌঁছেছে, তাহলে কনফিউজড কি করে হতে দিই। সাকার রূপেও দেখেছি, স্থূল রূপেও বাচ্চাা কোথাও গেলে বাচ্চাদেরকে বলতেন -- 'এসো বাচ্চারা, এসো বাচ্চারা' ('আও বাচ্চে, আও বাচ্চে' !) যখন মায়া রূপ দেখাবে তখন এই শব্দটিকে স্মরণ কোরো।
অমৃতবেলায় বাবার স্মরণকে পাওয়ারফুল করার জন্য প্রথমে নিজের স্বরূপকে পাওয়ারফুল বানাও। বিন্দু রূপ হয়ে বসতে পারো। কারণ যা কিছুই হয়ে যাক নিজের রূপ কখনো চেঞ্জ করবে না । শুধুমাত্র বাবাকেই সেই স্বরূপেই দেখো। বাবাকে বিন্দু রূপে বা ফরিস্তা রূপে দেখবার চেষ্টা করে, কিন্তু যতক্ষণ না নিজে বিন্দু রূপে বা ফরিস্তা রূপে দেখার চেষ্টা না করবে ততক্ষণ মিলন মেলা হবে না । শুধুই বাবাকে সেই রূপে দেখার চেষ্টা করা -- এ তো ভক্তি মার্গের সমান-ই হয়ে গেল। যেমন অন্যরা দেবতাদেরকে সেই রূপে দেখলেও নিজেরা যেমন সেই রকমই থেকে যায় । সেই সময় পরিবেশ থাকে আনন্দের। স্বল্প সময়ের জন্য তার প্রভাব পড়ে, কিন্তু সেই অনুভূতি হয় না । সেই জন্য প্রথমে নিজের স্বরূপকে পরিবর্তন করবার অভ্যাস করো। তবেই খুব পাওয়ারফুল স্টেজের অনুভব হবে।
দাদীদের প্রতি -- নানান প্রকারের সব দেখে বেশ আনন্দ হয় তাই না ! তবুও খুব সাহসী। নিজের সব কিছু চেঞ্জ করা এবং অন্যদেকে আপন করা-- এও এঁদের সাহসেরই পরিচায়ক। এত পরিবর্তন হয়ে গেছে যে মনে হয় যেন নিজেরই পরিবার। এও তো ড্রামার বিশেষ পার্ট। আপন ভাবের আভাস থাকে বলেই তো ওরাও এগিয়ে যেতে পারছে। এক একজনকে দেখে খুবই আনন্দ হয় । আগে তো ছিল একই ভারতের অনেক ডালপালার একটিই বৃক্ষ । কিন্তু এখন বিশ্বের প্রতিটি কোণ থেকে ভিন্ন ভিন্ন সংস্কার, ভিন্ন ভিন্ন ভাষা, ভিন্ন ভিন্ন খাওয়া দাওয়া -- এখন সব আত্মারাই একটিই বৃক্ষের হয়ে গেছে -- এও এক বিস্ময় । এটাই কামাল হল যে -- সবাই এক ছিল, এখন এক রয়েছে আর এক থাকবেও। এমনই অনুভব করে। বিশেষভাবে সকলের স্নেহ লাভ তো হয়েই যায় ।
পান্ডবদের প্রতি -- সকলেই মহাদানী তো ! কাউকে আনন্দ দেওয়া -- এও সবচেয়ে বড় পুণ্য কর্ম। এটা হল বড় সেবা। পান্ডব তো সদা একরস। একতার বাঁধনে থেকে সদা ইকোনমি করে চলে তাই না ! সকল পান্ডবই হল মহিমা যোগ্য, পূজনীয়ও। ভক্তদের কাছে এখনও পূজনীয়, কেবল এখনও প্রত্যক্ষ হওনি। ( পান্ডবদের পূজা কেবল গণেশ বা হনুমান রূপেই হয়ে থাকে।) না আরও দেবতাও রয়েছেন। গণেশ হলেন তিনি, যিনি তাঁর পেটে সব কথা লুকিয়ে রাখতে পারেন, এ কান ও কান করেন না । সকলে সন্তুষ্ট তো ? পান্ডবপতি এবং পান্ডব হল সব সময়ের কম্বাইন্ড রূপ। পান্ডব পতি পান্ডবদের ছাড়া যিনি কিছু করতে পারেন না । যেমন রয়েছেন শিবশক্তি, তেমনই পান্ডবপতি। যেমন পান্ডবরা পান্ডবপতিকে সামনে রেখেছেন, তেমনই পান্ডবপতিও পান্ডবদের সামনে রেখেছেন । তো সদা কম্বাইন্ড রূপ মনে থাকে ? নিজেকে কখনো একা অনুভব করো না তো ? বন্ধু থাকলে ভালো হতো, এমন মনে হয় না তো ? কাকে বলবো, কীভাবে বলবো, এমন হয় না তো ? যে সদা কম্বাইন্ড রূপে থাকে তার কাছে বাপদাদা সাকার রূপে যেন সর্ব সম্বন্ধ নিয়ে সামনে আসেন। যত বাবার প্রতি ভালোবাসা থাকবে তত শীঘ্রই বাবা সামনে আসবেন। এমন ভেবো না যে, তিনি তো নিরাকার, আকার, কথা কেমন করে হবে। অন্যদের সঙ্গে কথা বলবার জন্য সময় বের করতে হয়, ওখানে তো খুঁজতে বা টাইমেরও প্রয়োজন পড়বে না । যেখানেই ডাকবে সেখানেই উপস্থিত, সেই জন্যই বলে 'হাজির হজুর'। তো এমন অনুভব হয় ? এখন তো দিনদিন এমন আসবে যে যেমন প্যাকটিক্যালে অনুভব করলে যে আজ বাপদাদা এলেন, সামনে এলেন, হাত ধরলেন, বুদ্ধি দিয়ে নয়, চোখ দিয়েই দেখবে, অনুভব হবে। কিন্তু তাতে কেবলমাত্র এক বাবা -- দ্বিতীয় আর কেউ নয় -- এই পাঠটিই পাক্কা করতে হবে। তারপরে তো যেমন ছায়া সাথে চলে, তেমনি বাপদাদা দৃষ্টির বাইরে আর যাবেন না।
কখনো হদের বৈরাগ্য আসে না তো ? বেহদের তো থাকা উচিত । সকলেই যজ্ঞসেবার দায়িত্ব তো কাঁধে তুলে নিয়েছো। এখন কেবল আমরা সকলেই এক, আমাদের সকলের সকল কাজই হল এক, এটাই যেন প্র্যাকটিল্যালি দেখা যায় । এখন একটা রেকর্ড বানাতে হবে। কি সেটা ? সেটা সাউন্ড রেকর্ড নয় । একে অপরকে রিগার্ড (সম্মান) দেওয়ার রেকর্ড । সেই রেকর্ড তারপর চতুর্দিকে বাজবে। রিগার্ড দেওয়া, রিগার্ড নেওয়া । ছোটোদেরও রিগার্ড দেবে, বড়দেরও রিগার্ড দেবে। এই রিগার্ডের রেকর্ড এখন বের করতে হবে। এখন চতুর্দিকে এই রেকর্ডেরই প্রয়োজন ।
স্ব- উন্নতি এবং বিশ্ব উন্নতি -- এই দুয়েরই প্ল্যান যাতে সাথে সাথে চলে। দৈবী গুণের মহত্ত্বের মনন করো। এক একটি গুণকে ধারণ করার ক্ষেত্রে কি কোনো সমস্যা আসে ? সে সব সমাপ্ত করে ধারণ করে চারিদিকে সৌরভ ছড়িয়ে দাও যাতে সকলেই অনুভব করতে পারে । বুঝেছো ।
বরদান : --
এক বল এক ভরসা-র আধারে লক্ষ্যকে সমীপে অনুভবকারী সাহসী(হিম্মতবান) ভব
উপরের দিকে যত ওঠা যায়, প্রথমে তো অনেক ঝড় তুফান সামনে আসে, স্টীমারকে পাড়ে যেতে হলে ঝঞ্ঝার মোকাবিলা করতেই হয়, সেই জন্য চটকরে ঘাবড়াবে না, ক্লান্ত হবে না বা থেমেও থেকো না । সাথীকে সাথে রাখলে সকল বাধাই সহজ হয়ে যাবে, সাহসী হয়ে বাবার সহায়তার পাত্র হও। এক বল এক ভরসা -- এই পাঠটিকে সদা পাক্কা রাখো, তাহলেই কঠিন পরিস্থিতি থেকে সহজেই বেরিয়ে আসতে পারবে এবং তখন লক্ষ্য সমীপ অনুভব হবে।
শ্লোগান : --
বিশ্ব কল্যাণকারী সে-ই যে প্রকৃতি সহিত সকল আত্মাদের প্রতি শুভ ভাবনা রাখে।