BK Murli 11 May 2016 In Bengali

bk murli today

Posted by: BK Prerana

BK Prerana is executive editor at bkmurlis.net and covers daily updates from Brahma Kumaris Spiritual University. Prerana updates murlis in English and Hindi everyday.
Twitter: @bkprerana | Facebook: @bkkumarisprerana
Share:






    BK Murli 11 May 2016 In Bengali

     ১১-০৫-২০১৬ প্রাতঃ মুরলী ওমশান্তি “বাপদাদা” মধুবন

    “মিষ্টি বাচ্চারা – তোমরা বাবার কাছে এসেছ নিজেদের ভাগ্যকে উন্নত বানাতে, তাই যত বেশী শ্রীমত অনুসারে চলবে ততই উচু ভাগ্যের অধিকারী হবে।”

    প্রশ্ন : 

    ভক্তির কোন কোন অভ্যাস এখন আর তোমাদের মধ্যে থাকা উচিত নয় ?

    উত্তর : 

    ভক্তি-মার্গের লোকেরা অল্প দুঃখ হলেই, বা অসুখ-বিসুখ কিছু হলেই বলে থাকে- হে রাম, হে ভগবান, এই ধরণের হায়-হায় করার অভ্যাস আছে। কিন্তু জ্ঞানের পাঠ নেবার পর -এখন থেকে বাচ্চারা, তোমাদের মুখ থেকে যেন কখনো এই রকম কথা বের না হয়। যেহেতু, তোমাদের তো ভেতরে-ভেতরে একাগ্রতার সাথে, মিষ্টি বাবাকে পরম আদর ও ভালবাসা সহকারে লাগাতর স্মরণ করে যেতে হবে।

    গীত :- 

    তকদীর জাগাকর আয়ী হুঁ......।
    ( ভাগ্যকে জাগাবার দিশা পেয়ে গেছি ......)

    ওম শান্তি! 

    প্রত্যেক মনুষ্য পুরুষার্থ করে – সুখ আর শান্তির ভাগ্য বানানোর জন্যে। সাধু-সন্ত, সন্যাসী ইত্যাদিরা বলেন, আমাদের শান্তির প্রয়োজন। দুঃখ হরণ করো, সুখ দাও। যেহেতু তারা বোঝেন – একমাত্র ভগবানই হলেন প্রত্যেক মনুষ্যের দুঃখ-হর্তা, সুখ-কর্তা। কিন্তু ভগবানকে তো মনুষ্যরা সেভাবে জানে না। তোমরা বাচ্চারা অবশ্য ওনাকে বলো- 'শিববাবা'। কিন্তু- ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শংকরকে কোনও যুক্তিতেই 'বাবা' বলা যায় না। যেহেতু - ওনারা তো হলেন দেবতা। একমাত্র নিরাকারকেই 'ভগবান' ও 'বাবা' বলা যাবে, যিনি হলেন নিরাকার, প্রকৃত অর্থে- যার পুজো করা হয়। জ্ঞানীরা তো জানেই যে এই নিরাকার পরমাত্মা শিববাবা হলেন সকলেরই 'বাবা' (আত্মাদের)। কিন্তু সবার তো এটা খেয়ালেই আসে না যে আমরা ওনাকে বাবা কেন বলি। আমাদের তো একজন লৌকিক বাবা আছেনই– ইনি তাহলে আবার কি প্রকারের বাবা ! আমাদের (নিরাকার) আত্মার অস্তিত্বই তা প্রমাণ করে উনি হলেন নিরাকার বাবা। উনিও যেমন নিরাকার, আমি আত্মাও হলাম সেরূপ নিরাকার। সাকার বাবা থাকা সত্ত্বেও আত্মা ওই বাবাকে ভুলতে পারে না। যেহেতু উনি হলেন গড্-ফাদার (ঈশ্বরীয় পিতা) আর আমরা (আত্মারা) হলাম তার সন্তান। এনারা ওনাকেই বলেন পরমপিতা। ইংরেজিতে বলে – গড্ ফাদার, সুপ্রীম্ সৌল, (পরম আত্মা) যিনি সর্ব্বোচ্চ। লৌকিক বাবা তো হলো আমাদের এই শরীরের রচয়িতা আর ইনি হলেন পারলৌকিক বাবা, যিনি জগৎ সংসারের রচয়িতা। বাবাই নিজেই বসে সে সব বাচ্চাদেরকে বোঝান। তাই এই বাবাকে স্মরণ করে বাবার থেকে সেই আশীর্ব্বাদের বর্সা উপহার প্রাপ্ত করতে হয়। তোমরাও তাই বাবার কাছে এসেছ সেই অধিকার নিতে। যিনি দুঃখ-হর্তা, সুখ-কর্তা সেই বাবাই নিজে এসে সেই সুখের রাস্তা বলে দেন। তারপর ওখানে (সুখধাম=স্বর্গ) দুঃখের নাম-গন্ধের চিহ্ন মাত্রও থাকে না। এখানে তো অনেক প্রকারের দুঃখের ভোগ আছে, তাই সকলে ওনাকেই ডাকে। বর্তমানের দুনিয়াতে অনেক প্রকারের দুঃখ-কষ্ট আসবেই। যেমন ভালবাসার কেউ মারা গেলে কতই না দুঃখ হয়। 'হ্যাঁ ভগবান' ‘হায়-ভগবান’ বলে কাঁদে তখন। কিন্তু তিনি তো হলেন কল্যাণকারী বাবা। এ ধরণের গানও করো তো তোমরা, তাই কখনও তিনি অবশ্যই দুঃখ হরণ করে, সুখ দিয়েছেন। বাবা এসে সে সবই বোঝায় – বাচ্চারা, তোমরাই কল্পে-কল্পে যখন অনেক দুঃখী ও পতিত হও, তখন আমাকে ডাকো, হে বাবা তুমি আসো। বাবাও জানান, "আমি তো কল্প-কল্পেই আসি - এই সঙ্গম সময়কালে। পবিত্র-পাবন দুনিয়ার আদি (শুরু) আর পতিত দুনিয়ার অন্তকে (শেষ) সময়কে সঙ্গম বলা হয়। এই একটাই সঙ্গম-যুগেরই গুন-কীর্তনের যা গায়ন আছে। বাবা আসেনই আমাদের আত্মাতে জ্যোতি (আলো) জাগানোর জন্যে। দুঃখ হরণ করে সুখ দেওয়ার জন্যে। তোমরা জানো আমরা সেই পারলৌকিক বাবার কাছে এসেছি, যিনি (ব্রহ্মা) বাবার মধ্যে প্রবেশ করে আমাদের নিকট এসেছেন। উনি নিজেই তা বলেন, আমি এর (ব্রহ্মার) মধ্যে প্রবেশ করে এর নাম ব্রহ্মা রাখি। আর তোমরা সকলে হলে ব্রহ্মাকুমার আর ব্রহ্মাকুমারী। তোমাদের এই নিশ্চয়তা আছে যে আমরা ব্রহ্মার সন্তান হয়েছি – বাবার থেকে সেই সুখের বর্ষা (অধিকার) নিতে। একদা তোমরা এই বাচ্চাদেরই কত সুখ ছিল যখন এখানেই এই লক্ষী-নারায়নের রাজ্য ছিল। কিন্তু এখন তো তা হয়েছে কলিযুগ, দুঃখধাম। তারপরে আবার আসবে সত্যযুগ। ওয়ার্ল্ডের হিস্ট্রি-জিওগ্রাফি রিপিট (পৃথিবীর সময় ও স্থান-কাল-পাত্র, ঘটনাক্রম ও ভৌগলিক অবস্থা সব কিছুই ফিরে ফিরে আসে) হতে থাকে। সত্যযুগের শুরুতে আবার পূর্বেররূপেই সেই লক্ষ্মী-নারায়ণেরই রাজ্যের প্রয়োজন হয়। যেহেতু এই কাল-চক্র ক্রমান্বয়ে ঘুরতেই থাকে, তার নিজের গতির নিয়মেই। তাই বাবা বোঝাচ্ছেন- যদিও তোমরা এখন নরকবাসীতে পরিনত হয়েছো কিন্তু এখন আবার তোমাদেরকেই স্বর্গবাসী হতে হবে। একদা তোমরাই দেবী-দেবতাদের অনেক ছোট কল্প-বৃক্ষের ঝাড় ছিল। এখন আবার তোমাদের সেই স্মৃতি ফিরে এসেছে, তাই বুঝতে পারছো, আমরাই সেই- আমরা যারা ৮৪ বার জন্ম নিয়েছি। একদা আমরাই সারা বিশ্বের মালিক ছিলাম। তারপর পুনঃজন্ম নিতে নিতে এখন এখানে এসে উপস্থিত হয়েছো। এটাই হল তোমাদের ৮৪ জন্মের অন্তেরও অন্ত। দুনিয়ায় তো আবার নতুন থেকে পুরনো অবশ্যই হবে। নতুন দুনিয়া যখন ছিল তখন তা পবিত্র-পাবন দুনিয়া ছিল। যা এখন আবার হয়েছে এত পুরনো দুনিয়া। তাই তো সকলে কতো দুঃখী কাঙ্গাল অবস্থায় এসে পৌঁছেছে। এই ভারত একদা অনেক ধনী-সাহুকার ছিল। সেখানে তখন পবিত্র গৃহস্থ আশ্রম ছিল। তা অতি পবিত্র প্রবৃত্তি-মার্গ ছিল, যা সম্পূর্ণ নির্বিকারী ছিল, সর্বগুন সম্পন্ন, ১৬ কলা সম্পূর্ণ ছিল। এই সব কথা যদিও কোনও শাস্ত্রে নেই। কারণ শাস্ত্র হলো ভক্তি মার্গের, যার উৎপত্তি অনেক পরে। ভক্তিরই নিয়ম-কানুনেই আবদ্ধ থাকে তারা। বাবার সাথে দেখা করার দিশা বা রাস্তা শাস্ত্র থেকে জানতে পারা না। অথচ, তাদের ধারণায় এটাও বোঝে- ভগবানকে এখানে আসতেই তো হবে। কিন্তু, তার কাছ পর্যন্ত্য পৌঁছনোর তো কোনো প্রশ্নই নেই-তাদের মনে। যজ্ঞ, তপ ইত্যাদি করা – এই সব কোনো প্রকৃত রাস্তা নয়। তারা আবার ভগবানকে ডাকতেই থাকে- বলে তুমি আসো, তুমি এসে আমাদেরকে দিশা দেখাও, রাস্তা বলো। আমাদের আত্মা এখন তমোপ্রধান হয়ে গেছে. যেই কারণে আর উড়তেই পারে না অর্থাৎ বাবার কাছে (পরমধামে) যেতে পারে না। এমনিতে তো আত্মা এক শরীর ছেড়ে দ্বিতীয় শরীর নেয়। কোথা থেকে কোথায় চলে যায়। আমেরিকাও যেতে পারে। কারো কারো সাথে সম্মন্ধ হলে আত্মা ঝট্ করে উড়ে যাবে ওখানে, এক সেকেন্ডে। কিন্তু উড়ে যে তারা নিজের ঘরে যাবে, এটাই তারা আর পারে না। যেহেতু পাপী-পতিত আত্মারা ওখানে যেতে পারে না। তারজন্যই তাকে ডাকে, হে পতিত-পাবন আসো। কিন্তু, বাবা যখন আসে, এসে বোঝায় ও বলেন, "আমি তখনই আসি, যখন সারা দুনিয়া পতিত হয়ে যায়। বর্তমানের পতিত দুনিয়াতে এখন একজনও পবিত্র-পাবন নেই। এদিকে তারা আবার ভাবে যে, গঙ্গাই হলো পতিত-পাবনী, তাই তো পবিত্র হবার লক্ষ্যে তারা সেখানে স্নান করতেও যায়। কিন্তু জলের দ্বারা কেউ তো আর পবিত্র-পাবন হতে পারে না। পুরনো দুনিয়াটাই হলো পতিত-দুনিয়া। আর নতুন দুনিয়া হলো পাবন। এখন তোমরা বেহদের বাবার থেকে বর্ষা নিতে এসেছ। অতএব তোমাদেরকে পুণ্য আত্মা অবশ্যই হতে হবে। তোমাদের আত্মাই একদা সতোপ্রধান অবস্থায় ছিল- যা এখন তমোপ্রধান হয়ে গেছে। কিন্তু, তাই বলে সতোপ্রধান কোনো গঙ্গাস্নানের মাধ্যমে হয় না। পতিতদের পাবন বানানো – এটা তো হলো একমাত্র এই বাবার কাজ। এছাড়া জলের নদী তো জগৎ জুড়েই আছে। মেঘ থেকেও তো জল পড়ে, যা সকলেই তা এমনিতেই পেতে পারে। যদি জলের নদী কারোকে পাবন বানায়- তাহলে তো সকলেই পাবন হয়ে যেত। পাবন হওয়ার সেই যুক্তি এই বাবাই এসে বলেন, এই ব্রহ্মার ইন্দ্রিয় দ্বারা। এর (ব্রহ্মার) নিজেরও আত্মা আছে। বাবা বলেন – কিন্তু, আমার নিজের কোনও শরীর নেই। কল্প-কল্প -এর (ব্রহ্মার) মধ্যেই আসি তোমাদেরকে বোঝাতে। তোমরা নিজেদের জন্ম ও তার রহস্যকে সেভাবে জানো না। অন্যেরা তো কল্পের আয়ুকেই লক্ষ লক্ষ বছর বলে। বাবা বলেন – আসলে এটা হলো আমাদের ৮৪ জন্মের চক্র। প্রতি ৫ হাজার বর্ষ সময়ে ৮৪ লক্ষ বার জন্ম কেউ নিতেই পারে না। তাই তো বাবা বোঝাচ্ছেন– স্বর্গে তোমরা যখন ১৬ কলা সম্পূর্ণ ছিলে, তারপরে তা ২ কলা কম হয়, তারও পরে ধীরে-ধীরে আরও কম হতে থাকে। এই ভাবেই দূনিয়াও নতুন-দুনিয়া থেকে পুরনো-দুনিয়া হয়। দ্বাপর আর কলিযুগকে পতিত দুনিয়া বলা হয়। যদিও এই সব কথা কোনো শাস্ত্রে নেই। নতুন-দুনিয়া থেকে আবার পুরনো-দুনিয়া হয়। দ্বাপর ও কলিযুগকেই পতিত দুনিয়া বলা হয়। এই সব কথা কোনো শাস্ত্রে নেই। একমাত্র আমাকেই জ্ঞানের সাগর বলা হয়। আমি কোনো পুঁথি, শাস্ত্রাদি পড়াশোনাও করি না। একমাত্র আমিই এই সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তকে জানি। ভক্তি মার্গের ওদের তাই এই জ্ঞান হতে পারে না। ওরা যা জানে তা ওই সব হলো ভক্তির জ্ঞান। ওরা নিজেরাই তা আবার গানও করে যে- আমি হলাম পাপী, নীচ। আমার মধ্যে কোনো গুনই নেই। ... এর ওপর দয়া করা হয়েছে বলেই তো তখন তারা মনুষ্য থেকে দেবতায় পরিণত হয়েছে, যার ফলে তাদের ভাগ্যও হয়েছে উঁচু থেকে অতি উঁচু ভাগ্য। স্কুলে যেমন বাচ্চারা ভাগ্য বানাতে যায়। ফলে কেউ জর্জ, কেউ ইঞ্জিনিয়ার হয়। কিন্তু ওটা হলো তো বিকারী ভাগ্য। আর এখানে তোমাদের প্রাপ্তি হয় - ঈশ্বরের আশীর্ব্বাদের দ্বারা সৌভাগ্য, তার জন্যেই তো ওনাকে ডাকা হয় দুঃখ-হর্তা সুখ-কর্তা। দেবতা হওয়ার নিমিত্তে যে পাঠ, তা এই বাবা ছাড়া আর কেউই পড়াতে পারেন না। বাবা আত্মাদের সাথে বসে সরাসরি কথা বলেন। আত্মারা নিজেরাই তারপর বলে, এটা হলো আমার শরীর। কিন্তু, শরীর তো আর বলবে না, এটা আমার আত্মা। কারণ এই শরীরের ভিতরেই সেই আত্মা আছে, সেই বলে থাকে এটা হলো আমার শরীর। মনুষ্যরা তাই বলে থাকে, আমার আত্মাকে কিন্তু দুঃখ দিও না। আত্মা শরীরে না থাকলে কিন্তু তা বলতে পারতো না। এই আত্মাই বলে যে, আমি এক শরীর ছেড়ে আবার দ্বিতীয় শরীরে প্রবেশ করি। আমরা অবশ্যই ৮৪ জন্মের ভোগ করেই, এখন আবার নরকবাসী হয়েছি। এরপর আবার তোমরা স্বর্গবাসী হওয়ার পুরুষার্থ করছো। আর সেই স্বর্গবাসী তো এই বাবাই বানাবে। আক্ষরিক অর্থে স্বর্গ বলা হয় সত্য-যুগকে। এখানে জাগতিক যারা বলে, অমুকে স্বর্গবাসী হয়েছে, এটা অবশ্যই তারা মিথ্যে কথাই বলে। বর্তমানের এই জাগতিক দুনিয়াটাই তো হলো একটা নরক। তবুও, কেউ মরে গেলে বলে যে স্বর্গে গেছে। তাই যদি বলো, তাহলে তাকেই আবার এই নরকের দুনিয়ায় ডাকো কেন যে, আত্মা তুমি আসো, এসে খাবার খাও। স্বর্গে তো ওদের অনেক বৈভব প্রাপ্তি হয়, তবুও তাদেরকে নরকে কেন ডাক ? মনুষ্যের মধ্যে এতটুকুও বোধ নেই ? তাই তো বাবা নিজেই বসে এভাবে বোঝান – এখন আর অল্পকাল পরেই এই কলিযুগের সমাপ্ত হতে হবে, এই পুরো দুনিয়াটাই আগুনে ভষ্মীভূত হয়ে যাবে। তখন তো এই সব কিছুরই সমাপ্তি হয়ে যাবে। তোমরা বাচ্চারা, যারা বাবার থেকে আশীর্ব্বাদের বর্ষা নেও, কেবল তারাই সেই সত্যযুগে এসে রাজত্ব করতে পারবে। পূর্বেও এই লক্ষ্মী-নারায়ণকে সেই আশীর্ব্বাদের বর্ষা কে দিয়েছিল ? -অবশ্যই এই বাবা। তোমরাও এখন এই বাবার দ্বারাই তার উপযুক্ত হচ্ছো। তোমরা অবশ্য বলবে, আমরা নরকবাসী থেকে স্বর্গবাসী হতে যাচ্ছি। বাবা বলেন– আমি কিন্তু, সেরূপে স্বর্গবাসী হই না। যেহেতু, আমি তো আমার পরমধামে থাকি। নরকবাসী আর স্বর্গবাসী এসব কেবল তোমরাই হও। আত্মার প্রকৃত নিবাস স্থান হলো শান্তিধাম। তারপর সেখান থেকেই তোমরা এই সুখধামে আসো। এটাই সুখধাম আবার এটাই হলো দুঃখধাম, তাই এর এখন বিনাশ তো অবশ্যই হতে হবে। এটাই কেউ সেভাবে জানে না যে, ভগবান ব্রহ্মার শরীরে প্রবেশ করে কে এসে এই রাজযোগ শেখায়। ভক্তি-মার্গের ওরা ভাবে যে, কৃষ্ণ এসেছে। কিন্তু, কৃষ্ণের শরীরকেও তারা ভাবে না। কৃষ্ণকে কিন্তু কোনওভাবেই ভগবান বলা যেতে পারে না। সে তো হলো এই জাগতিক বিশ্বের মালিক। কিন্তু, লিবেরেটার বা সকলের উদ্ধারকারী হলেন, এক ও একমাত্র একজন, -তিনি হলেন সুপ্রীম সোল বা পরম-আত্মা। দুনিয়াতে এই ধরণের পাঠ আর কোনও সৎসঙ্গেই এমন হয় না, যেখানে অন্যেরা জানতে পারে যে, আমরা এই বাবার থেকেই স্বর্গের আশীর্ব্বাদের বর্ষা (অধিকার / উপহার) পাই। পতিত থেকে পবিত্র পাবন এই বাবাই বানায়। বাবা বলে – আমি হলাম তোমাদের সত্যিকারের গুরু, তাই তোমাদেরকে পবিত্র-পাবন বানাই। কিন্তু, গঙ্গার জল পবিত্র বা পাবন বানাতে পারে না। আসলে এটা তো হলোই পাপ-আত্মাদের দুনিয়া। যা কিছু করুক না কেন সিঁড়ির চক্করে নীচে তো নামতেই হবে। সতোপ্রধান থেকে তমোপ্রধানে আসতেই হবে। তাই তো জ্ঞান-মার্গে তোমরা ভক্তি করো না। হায়-রামও বলো না। জ্ঞানের এই পাঠ যিনি পড়াচ্ছেন -তিনি তো হলেনন- তোমাদের বাবা। তাই তো- হে ভগবান আসো, হে রাম-ও বলার প্রয়োজন পড়ে না তোমাদের। কিন্তু অনেকের মধ্যে এই পুরোনো অভ্যাস এখনও আছে তো, তাই এই অক্ষর (শব্দ) বেরিয়েও যায়। তোমাদেরকে তাই বাবা বলেন– আমাকেই স্মরণ করো তাহলেই তোমাদের বিকর্ম বিনাশ হবে আর তোমরা আমার কাছে আসতে পারবে। স্মরণ শুধু একজনকেই করতে হবে। বাবা বলেন– এটাই হলো তোমাদের অন্তিম জন্ম। এখন তোমরা এই আশীর্ব্বাদের বর্ষা নিলে তো নিলে, নাহলে আর কখনোই তা পেতে পারবে না। বাবা এও বুঝিয়েছেন, এরা যারা নিজেদেরকে হিন্দু বলে, তারা কিন্তু আসলে দেবী-দেবতা ধর্মের ছিল। খ্রীষ্টান ধর্মের যারা আছে তারা কিন্তু কখনো তাদের ধর্মের নাম বদল করে না। যদিও তারা তমোপ্রধান অবস্থায় আছে, তাসত্তেও তারা সেই খ্রীষ্টান ধর্মেই আছে। প্রকৃত অর্থে তোমরা হলে দেবী দেবতা। কিন্তু পতিত হওয়ার কারণে নিজেদেরকে হিন্দু বলে পরিচয় দাও। নিজেদেরকে আর দেবতা বলতে পারো না। তোমরা তো এটাই ভুলে গেছো যে, তোমরাই আসলে দেবী-দেবতা ধর্মের ছিলে। কিন্তু এখন নিজেদেরকে দেবতা ধর্মের কেউ বলে না কারণ তারা যে এখন বিকারী হয়ে গেছে। এর প্রধান কারণ হলো দেহ-অভিমান। বাচ্চাদেরকে অনেক ভালো রীতিতে সে সবই বোঝানো হয়। এ কোনো সাধু-সন্ত ইত্যাদির ব্যাপার নয়। আমি হলাম ব্যাপারী, অমুখ, - এই সবই হলো দেহ-অভিমান। তাই এখন তোমাদেরকে অবশ্যই দেহী-অভিমানী হতে হবে। যদিও এই দেহী-অভিমানী হওয়াতেই যা পরিশ্রম। তোমাদেরকে বাবার থেকে আশীর্ব্বাদের বর্ষা নিতে হবে। তাই বাবাকে স্মরণ করতেই হবে। হাত তার নিজের কাজ করুক, কিন্তু মন তাকে স্মরণ করুক ...। তোমরা হলে সেই বাবার আশিক (প্রেমিকা) এই এক মাশুকের (প্রেমিক বাবার)। যিনি সকলেরই সৎগতি-দাতা উনিই হলেন এক ওএকমাত্র মাশুক (প্রেমী)। উনি আসেনই তখন, যখন এলে ওনার দ্বারা সকলের সৎগতি প্রাপ্ত হয়, স্বর্গের স্থাপনা হয়, সকলেরই দুঃখের অবসান হয়। তাই তো এখন তোমরা বাচ্চারা এখানে এসেছ – বেহদের বাবার থেকে স্বর্গের, ২১ জন্মের জন্যে সদা সুখের আশীর্ব্বাদের বর্ষা প্রাপ্ত করতে। আর যে কোনও মনুষ্য মাত্র কাউকেই স্বর্গের মালিক তো আর বানাতে পারেন না। শিববাবা এই ভারত খন্ডেই এসে ভারতকেই স্বর্গ বানায়। সেই উদ্দেশ্যেই শিব জয়ন্তীও মানানো হয়। কিন্তু তারা তা ভুলেই গেছে যে, এই বাবার থেকেই আমরা একদা স্বর্গের বর্ষা প্রাপ্ত করেছিলাম। আচ্ছা!

    মিষ্টি-মিষ্টি সিখিলধে বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপ-দাদার স্মরণ ভালবাসা আর গুড-মর্নিং। রুহানি বাবার রুহানি বাচ্চাদেরকে নমস্কার।

    ধারণার জন্য মুখ্য সার :

    ১) পড়ার আধারে নিজের ভাগ্যকে উঁচু বানাতে হবে। মনুষ্য থেকে দেবতা হতে হবে। পবিত্র-পাবন হয়ে আপন ঘরেই ফিরে যেতে হবে। তারপর আবার নতুন দুনিয়াতে আসতে হবে।

    ২) হাত দিয়ে কাজ করার সাথে সাথে – এক বাবার স্মরণে থাকতে হবে। কোনো উল্টো-পাল্টা কথা শোনা যেমন উচিত নয়, তেমনি শোনানোও উচিত নয়।

    বরদান : সদা পশ্চাতাপ থেকে দূরে থেকে, প্রাপ্তি স্বরূপ স্থিতির অনুভব করতে পারার মতন সুদ্ধ-বুদ্ধিমান ভব !

    যেই বাচ্চারা বাবাকে নিজের জীবন-তরী সমর্পণ করে, আমিত্ব মিটিয়ে দেয় এবং শ্রীমতে নিজের মনমত মেশায় না তারা সদা পশ্চাতাপ থেকে রেহাই পেয়ে প্রাপ্তি স্বরূপ স্থিতির অনুভব করে। তাদেরকেই সৎ বুদ্ধিমান বলা হয়। এই রকম সৎ বুদ্ধি যাদের, তারা ঝড়-তুফানকে তোহ্ফা অর্থাৎ উপহার ভেবে স্বভাব-সংস্কারের টক্করকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আধার ভেবে, সদা বাবাকেই সাথী বানিয়ে, সাক্ষী হয়ে, সকল পার্ট দেখা সত্ত্বেও, সদানন্দ হর্ষিত হয়েই চলে।

    স্লোগান : 

    যারা সুখদাতা বাবার সুখদায়ী বাচ্চা, তাদের কাছে কোনও প্রকারের দুঃখের ঢেউই আসতে পারে না।

    ***OM SHANTI***