BK Murli 10 June 2016 Bengali
১০-০৬-১৬ প্রাতঃমুরলী ওমশান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা- স্মরণের দ্বারা আত্মার খাদ বের করতে থাকো, আত্মা যখন সম্পূর্ণ পবিত্র হয় তখন ঘরে যেতে পারে"
প্রশ্নঃ-
এই অন্তিম জন্মে বাবার কোন্ নির্দেশ পালন করলেই বাচ্চাদের কল্যাণ হয় ?
উত্তরঃ-
বাবা বলেন মিষ্টি বাচ্চারা- এই অন্তিম জন্মে বাবার থেকে পুরো বর্সা নিয়ে নাও। বুদ্ধিকে বাইরে ঘুরিও না, বিষ ছেড়ে অমৃত পান করো । এই অন্তিম জন্মেই তোমাদের ৬৩ জন্মের অভ্যাস বদলাটাতে হবে এইজন্য রাত-দিন পরিশ্রম করে দেহী-অভিমানী হও।
ওমশান্তি ।
শান্তিধাম হল বিশ্রামপুরী ।এই দুনিয়ায় এখন বাচ্চারা ক্লান্ত হয়ে আছে । তারা চায় যে আমরা আমাদের সুখধামে যাই ।এই দুনিয়া ভাল লাগে না ।স্বর্গকে দেখলে নরকে হৃদয় কি করে লাগবে । বলে বাবা শীঘ্র করো, এই দুখধাম থেকে নিয়ে চলো ।বাবাও বোঝান- এতো ছিঃ- ছিঃ দুনিয়া আছে, এর নামই হল শয়তানি দুনিয়া, নরক । এটা কি কোনো ভালো শব্দ নাকি ? কোথায় দৈবী দুনিয়া আর কোথায় শয়তানি দুনিয়া, এই শয়তানি দুনিয়াতে সবাই বিরক্ত হয়ে গেছে । কিন্তু ফিরে কেউ যেতে পারে না ।
তমোপ্রধানের খাদ পড়ে আছে ।এই খাদ আত্মার থেকে বের হয়, তার জন্য পুরুষার্থ করছে ।যারা ভালো পুরুষার্থী, তাদের অবস্থা পরে ভালো হয়ে যাবে ।এই পুরনো দুনিয়া শেষ হয়ে যাবে, এখন তো বাকি অল্প সময় আছে । যতক্ষণ না বাবা এসে ফিরিয়ে নিয়ে যান ততক্ষণ কেউ ফিরে যেতে পারে না । দুনিয়াতে দুঃখ আছে তো । বাড়িতেও কেউ না কেউ দুঃখে থাকে ।তোমাদের বাচ্চাদের হৃদয়ে আছে বাবা এখন আমাদের দুঃখ থেকে ছাড়াতে এসেছেন ।যে ভালো নিশ্চয়বুদ্ধি আছে যার, সে বাবার স্মরণকে কখনও ভোলে না ।ওনাকে বলাই হয়ে থাকে সকলের দুঃখ হর্তা ।বাচ্চারাই চেনে ।যদি সবাই চিনে নেয় তবে এতো সব মনুষ্য কোথায়
এসে বসবে, এটা হতে পারে না এইজন্য নাটকেও যুক্তি এরকম রচিত হয়েছে ।যে শ্রীমতে চলে সেই উঁচুপদ
পেতে পারে, সেটা তো ঠিক আছে ।সাজা খেয়েও শান্তিধাম অথবা পবিত্র দুনিয়াতে যাবে । কিন্তু উঁচুপদ পাবার জন্য পুরুষার্থ তো করতেই হবে ।দ্বিতীয়ত, পবিত্র না হয়ে পবিত্র দুনিয়াতে কেউ যেতে পারে না ।এরা যে বলে এরা জ্যোতিতে বিলীন হয়েছেন, ফিরে গেছেন- এটা হতে পারে না ।যারা প্রথমে সৃষ্টিতে এসেছেন, লক্ষ্মী-নারায়ণ, তারাও ফিরে যেতে পারে না তো আর কেউ কি করে যেতে পারে । এঁনাদেরও এখন ৮৪ জন্ম পুরো হয়েছে । এখন যাওয়ার জন্য তপস্যা করছেন ।সবাই ডাকেই এক বাবাকে ।ও ভগবান বাবা, ও মুক্তিদাতা- তিনি ভগবান, বাবা, দুখ হর্তা, সুখ কর্তা ।কৃষ্ণ আদি বা আর অন্যকে থোড়াই ডাকে ।ক্রিশ্চান হোক, বা মুসলমান সবাই ও ভগবান বাবা বলে ডাকে ।আত্মা ডাকে-নিজের বাবাকে ।বাবা বলেন তখন যখন বোঝেন আমরা হলাম আত্মা ।আত্মাও কিছু বস্তু আছে তো ।আত্মা কোন বড় বস্তু নয়, ও তো একটা তারা আর অতি সূক্ষ্ম। যেরকম বাবা সেরকম হল আত্মারও স্বরূপ । এখন তুমি বাবার মহিমা করছো - উনি হলেন সৎ-চিৎ, জ্ঞানের সাগর, আনন্দের সাগর। তোমাদের আত্মাও তাঁর মতোই হতে থাকে ।তোমাদের বুদ্ধিতে এখন সারা সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তের জ্ঞান এসে গেছে, আর কোনো মানুষেরই এই জ্ঞান নেই ।সারা ভারত, সারা বিদেশ খুঁজে নাও, কারুরই জানা নেই ।আত্মা ৮৪ জন্মের অভিনয় করে । ৮৪ লাখ তো অসম্ভব ব্যাপার । ৮৪ লাখ জন্মের তো কেউ বর্ণনই করতে পারবে না । বাবা বলেন তোমরা নিজের জন্মকে জানো না, আমি শোনাচ্ছি । ওই সব শুনেও পাথরবুদ্ধি বোঝে না যে ৮৪ লাখ জন্ম হলে কেউ শোনাবে কি করে ।
এখন তোমরা জানো আমরা হলাম ব্রাহ্মণ, আমরা ৮৪ জন্ম নিয়েছি । ব্রহ্মাও ৮৪ জন্ম নিয়েছেন, বিষ্ণু ও ৮৪ জন্ম নিয়েছেন । যিনি ব্রহ্মা তিনিই বিষ্ণু, যিনি বিষ্ণু তিনিই ব্রহ্মা ।লক্ষ্মী-নারায়ণই ৮৪ জন্ম নিয়ে আবার ব্রহ্মা-সরস্বতী হন ।এটাও হল বোঝার কথা। বাবা বলেন প্রত্যেক ৫ হাজার বছর পরে এসে বোঝাই । ৫ হাজার বছরের চক্র এটা ।এখন তোমরা বর্ণের রহস্যও বুঝেছ ।আমি সেই এর অর্থও বুঝেছ, আমরা আত্মা দেবতা হই আবার আমরা সেই ক্ষত্রিয় , আমরা সেই বৈশ্য শূদ্র হই ।এত-এত জন্ম নিই আবার আমরাই সেই ব্রাহ্মণ হই। ব্রাহ্মণদের হল এই একটা জন্ম । এটা হলই তোমাদের হীরের মত জন্ম ।
বাবা বলেন- এটা হল তোমাদের অন্তিম শরীর, এতে তোমরা স্বর্গের বর্সা পেতে পারো এইজন্য আর কোন দিকে মন লাগিও না । জ্ঞান অমৃত পান করো ।বোঝাও যায় নিশ্চয় ৮৪ জন্ম নেয় ।তোমরা প্রথমে সত্যযুগে সতোপ্রধান ছিলে ।তারপর সতো হও ।তারপর রূপার খাদ পরে, একদম পুরো হিসাব বলে ।এখন সরকারও বলে সোনাতে খাদ (ধাতু)মেশাও ।১৪ ক্যারট সোনা পড়ো তোমরা ।সোনাতে খাদ মেশানো এটা ভারতবাসী খারাপ লক্ষণ মনে করে । বিয়ে দিলে একদম খাঁটি সোনা পরে ।সোনার উপর ভারতবাসীর অনেক ভালবাসা । কেন ? ভারতের কথা জিজ্ঞাসা কোরো না ।সত্যযুগেও তো সোনার মহল ছিল, সোনার ইট ছিল । যেরকম এখানে ইটের ঢের লেগে থাকে । ওখানে সোনা-রুপার ঢের লেগে থাকে ।মায়া মাদারির খেলা দেখায় ।ও সোনার ইট দেখল ভাবল নিয়ে যাচ্ছি । নিচে নামল দেখল কিছুই নেই ।কোন না কোন কথা মনে লাগে ।কন্যারা ভাবে, এখন আমরা আবার স্বর্গে যাচ্ছি তবুও যদি স্বামী আদি বিরক্ত করে তো বেচারি ভিতরে কাঁদতে থাকে । কবে আমরা সুখধামে যাব ? বাবা এখন জলদি করুন ।বাবা বলেন বাচ্চা- জলদি কি করে করি, প্রথমে তুমি যোগবলের দ্বারা আবর্জনা তো বের করো । যোগের যাত্রায় থাকো । বাবা ধৈর্য ধরতে বলেন । ডাকো তো, হে পতিত- পাবন এসো । গাও- সর্বের সদগতি দাতা এক । এখানেরই কথা আছে । অকাসুর-বকাসুর এই সব কথা এই সঙ্গম সময়ের আছে ।এটা আছেই আসুরী দুনিয়া ।তো বাপ বোঝান, আমি কল্প-কল্প সঙ্গমেতেই আসি, যখন সারা ঝার জর্জরিভুত অবস্থায় থাকে ।
তোমরা জানো সত্যযুগে সব বস্তু সতোপ্রধান হয় ।এখানে এতো পশুপক্ষী আছে যা ওখানে হবে না । বড় লোকের কাছে সবকিছু ভাল পরিস্কার থাকে । তাদের থাকার স্থান, আসবাবপত্র খুব ভাল হয় । তোমরাও এরকম উচ্চ দেবতা হও ।ওখানে এরকম কোনো ছিঃ-ছিঃ বস্তু থাকতে পারে না । এখানে তো মশা আদি অনেকরকমের রোগ, কত নোংরা থাকে । গ্রামে এত নোংরা থাকে না ।বড় বড় শহরে অনেক আবর্জনা থাকে কারণ অনেক মানুষ হয়ে গেছে ।থাকবার জায়গা নেই । সেখানে তোমরা সারা বিশ্বের মালিক হও । মানুষ গায় একই ঘটে(বিশ্বে) ব্রহ্মা, একই ঘটে বিষ্ণু......এক ঘটেতেই ৯ লাখ তারা(Stars) । যে ব্রহ্মা সে-ই বিষ্ণু হয়ে যায় ।বিষ্ণুর সাথে তারারাও থাকে । সত্যযুগে ইনি দেবতা হলে এত থোড়াই হয়, ঝার প্রথমে ছোট হয় তারপর তা বৃদ্ধি হতে থাকে। সত্যুযুগে তো খুব অল্প হবে ।মিষ্টি নদীর উপর থাকবে ।এখানে নদীর থেকে অনেক খাল বের হয়। ওখানে খাল আদি থোড়াই হয় ।মাটির মত মনুষ্য হয়। এদের জন্য গঙ্গা যমুনা তো আছেই ।ঐ নদীরই কাছাকাছি থাকে । ৫ তত্ত্বও দেবতাদের গোলাম হয়ে যায় ।কখনও বেকায়দায় বৃষ্টি হয় না ।কখনও নদী উছলায় না ।নামই স্বর্গ তো আর কি ?এখন বলে স্বর্গের আয়ু এত লক্ষ বছর আছে ।আচ্ছা ভাল ওখানে কে রাজ্য করতেন, এটা তো বলো ।কত গল্প কথা বলে । তোমরা জানো, আমরা আগের কল্পের ন্যায় এই অভিনয় করছি । রুদ্র জ্ঞান যজ্ঞতে অনেক প্রকারের বিঘ্ন পরবে,আবার মনুষ্যরা বোঝে,অসুররা উপর থেকে নোংরা, গোবর আদি ঢালত ।কিন্তু না,তোমরা দেখো -কত বিঘ্ন পরে ।অবলাদের উপর অত্যাচার হলে তবে তো পাপের ঘড়া ভরবে ।বাবা বলেন-কিছু সহ্য করতে হবে ।তুমি নিজের বাপ আর বর্ষাকে স্মরণ করতে থাকো ।মার খাবার সময়ও বুদ্ধিতে স্মরণ করো- শিববাবা । তোমাদের তো বুদ্ধিতে জ্ঞান আছে, কাউকে ফাঁসিতে চড়ালে পাদ্রীরা বলে হে ভগবান বাবাকে স্মরণ করো ।এরকম বলবে না ক্রাইস্টকে স্মরণ করো ।ইসারা ভগবানের দিকে করে ।উনি এত মিষ্টি আছেন, সবাই ওনাকেই ডাকে ।আত্মাই ডাকে ।এখন দেহী-অভিমানী হওয়াতেই কষ্ট আছে । ৬৩ জন্ম তোমরা দেহ-অভিমানেই ছিলে ।এখন এই এক জন্মে এই আধাকল্পের অভ্যাস মেটাতে হবে ।তোমরা জানো, দেহী-অভিমানী হলে আমরা স্বর্গের মালিক হয়ে যাব ।কত উঁচু প্রাপ্তি আছে ।তো রাত- দিন এই চেষ্টাতেই থাকতে হবে ।মনুষ্য ধান্দা আদির জন্যও কষ্ট করে ।আমদানিতে কখনো মানুষের ঝিমুনি বা ক্লান্তি আসবে না কারণ আমদনি আছে ।পয়সার খুশি থাকে ।ক্লান্ত হবার কথাই থাকে না ।বাবাও অনুভবি আছেন তো ।রাতে ষ্টীমার আসলে গিয়ে মাল কিনত ।যতক্ষণ না গ্রাহকের পকেট খালি হয় ততক্ষণ ছাড়েন নি ।বাবা রথও পুরো অনুভবি নিয়েছেন ।ইনি সব অনুভব করেছেন ।গ্রামের বালকও ছিলেন ।১০ আনা মন আনাজ বেচতেন । এখন তো দেখো বিশ্বের মালিক তৈরি হন ।একদম গ্রামের ছিলেন ।তারপর উঁচুতে উঠে একদম জহরত এর ব্যবসায় লেগে গেলেন ।ব্যাস জহরতের কথা ।এনি হলেন খাঁটি জহরত ।এটা হোল রাজকীয় ব্যাপার ।বাবা অনেক অনুভবি আছেন ।বাবা ভাইসরয় আদির ঘরে এমনভাবে যেতেন জেনো নিজের ঘর ।একে আবার বলা হয় অবিনাশী জ্ঞান রত্ন ।যত এটা বুদ্ধিতে ধারণ করবে, এতে তুমি পদমপতি হবে ।শিববাবাকে বলা হয় সউদাগর, রত্নাগর ।ওনার মহিমাও করে আবার বলে দেয় সর্বব্যাপী ।মহিমার সাথে আবার এত গ্লানি । কিরকম হাল হয়ে গেছে ভক্তিমার্গের ।বাবা বলেন- যখন ভক্তি পুরো হয়, তখন ভক্তের রক্ষক বাপ আসেন।
অনেক ভক্তি কে করে এটাও সিদ্ধ হয়ে যায় ।সবথেকে অধিক ভক্তি তোমরা করো ।ওঁরাই এখানে এসে প্রথমে-প্রথমে ব্রাম্ভণ হয় আর বাপের থেকে বর্ষা নেয় পূজ্য হবার জন্য ।রাবণ পূজারী বানিয়েছে, বাপ পূজ্য বানান ।এটা হল ভগবান উবাচ ।ভগবান একই আছেন ।২-৩ ভগবান হয় না ।গীতা ভগবানেরই বাণী । শিব ভগবান উবাচর জায়গায় কৃষ্ণের নাম ঠুকে দিয়েছে তো কত ফারাক হয়ে গেছে ।নাটক অনুসার তবুও গীতার নাম এভাবে বদলাবারই আছে ।আবার ডাকে হে পতিত পাবন এসো ।বাপ পাবন বানান, রাবন পতিত বানায় ।তো বোঝবার জন্য কত বুদ্ধি প্রয়োজন । শ্রীমত, শ্রেষ্ঠ থেকে শ্রেষ্ঠ মত আছেই এক বাবারই ।
এই লক্ষ্মী-নারয়ণ স্বর্গের মালিক বাপের মতেতেই হয়েছেন ।আচ্ছা !
মিষ্টি-মিষ্টি সিকিলধে বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতার বাপদাদার স্মরণ-ভালবাসা আর সুপ্রভাত ।রুহানি বাপের
রুহানি বাচ্চাদের নমস্কার ।
ধারনার জন্য মুখ্য সারঃ-
১) এই এক জন্মে ৬৩ জন্মের পুরনো দেহ-অভিমানের অভ্যাস মেটাবার পরিশ্রম করতে হবে । দেহী-অভিমানী হয়ে স্বর্গের মালিক হতে হবে ।
২) এই হীরেতুল্য শেষ জন্মে বুদ্ধিকে অস্থির না করে, সতোপ্রধান হতে হবে ।অত্যাচারকে সহ্য করে বাবার র থেকে পুরো বর্সা নিতে হবে ।
বরদানঃ-
একমাত্র বাবার স্মৃতি দ্বারা সত্য 'সুহাগের' অনুভব কারী ভাগ্যবান আত্মা ভব(হয়)।
যে অন্য কোনো আত্মার কথা শুনেও শোনে না ,কোন অন্য আত্মার স্মৃতি সঙ্কল্প বা স্বপ্নতেও আনে না কোনো দেহধারীর প্রভাবে আসে না, এক বাবা অন্য কেউ নয় এই স্মৃতিতে থাকে তার সুহাগ অবিনাশী হয়ে যায় । এরকম সত্য সুহাগ যাদের তাকে তারাই ভাগ্যবান হয় ।
স্লোগানঃ-
নিজের শ্রেষ্ঠ স্থিতি বানাতে হলে অন্তর্মুখী হয়ে তারপর বহির্মুখীতে এসো ।