BK Murli 28 July 2016 Bengali
২৮-০৭-১৬ প্রাত: মুরলী ওম্ শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
" মিষ্টি বাচ্চারা - তোমরা এখানে এসেছো নিজের সঙ্গে পুরো দুনিয়াকে কায়া কল্পতরু বানাতে , আর এই স্মরণের যাত্রাতেই এই দুনিয়া কায়া কল্পতরু তৈরী হবে l"
প্রশ্ন :-
নরকবাসী থেকে স্বর্গবাসী হওয়ার নিয়ম বা বিধি কি ? এখন তোমরা বাচ্চারা কেমন করে নতুন জীবন প্রাপ্ত করবে ?
উত্তর :-
নরকবাসী থেকে স্বর্গবাসী হওয়ার জন্য অবশ্যই মৃত্যুকে বরণ করতে হবে l বাবা বলেন যে আমি সকলকেই সেই মৃত্যুর দান দিতে এসেছি l তোমাদের এই দেহের বিনাশ হবে আর আমি তোমাদের আত্মাকে নিয়ে যাবো l এই হলো সত্যিকারের জীবনদান l এইজন্যই এই মহাভারতের লড়াইয়ের প্রয়োজন , যার দ্বারা সকলের বিনাশ হবে l তখন আত্মারা পবিত্র হয়ে সবাই ঘরে ফিরে যাবে l তারপর তারা স্বর্গে আসবে l
গীত .......মা ও মা ........
ওম্ শান্তি l
মিষ্টি মিষ্টি রুহানি বাচ্চারা এই গানের লাইন শুনেছে l জগদম্বার মহিমাও তারা শুনেছে l জগদম্বার মহিমা এই ভারতেই করা হয় l জগদম্বা থাকলে জগৎ পিতা তো অবশ্যই থাকবে l জগদম্বা সরস্বতীকেই বলা হয় l বাস্তবে ওঁনার নাম একটাই হওয়া উচিত l তোমাদেরও তো নাম একটাই হয় l দুটো বা তিনটে তো হয় না l জগদম্বাকে সাকারে শরীরধারী দেখানো হয় l জগত পিতাও আছেন l যাকে প্রজাপিতাও বলা হয় l যেমন সারা জগতের আম্বা তেমনই সারা জগতের পিতা l দুজনেই নিশ্চয় এখানেই থাকবে l দুজনের নামই আমি তোমাদের শুনিয়েছি l দুজনে হলেন প্রজা পিতা এবং প্রজা মাতা l দ্বিতীয় জগত পিতা নিরাকার শিব বাবাকে বলা হয় l ইনি যেহেতু সকলের পিতা,তাই এনার নাম পরম পিতা পরমাত্মা শিব l শুধু ঈশ্বর বা পরমাত্মা বললেই চলবে না l ওনার নাম এবং রূপ দুইই আছে l ওনাকে গড ফাদারও বলা হয় l এক হলো আত্মাদের বাবা আর এক হলো সাকারী মনুষ্য আত্মাদের বাবা এবং মাম্মা l শিব হলেন সমস্ত আত্মাদের পিতা l আত্মারা বলেন , শিব হলেন তাদের বাবা l তারপর আত্মাদের যখন এই সাকার শরীরের সঙ্গে পরিচয় হয়, তখন আত্মারা বলেন, এই হলেন ব্রহ্মাবাবা , তাহলে তখন তো দুজন বাবা হয়ে গেলো l একজন হলেন শিববাবা আর দ্বিতীয়জন হলেন প্রজাপিতা ব্রহ্মা l শিববাবার বাচ্চা হলেন ব্রহ্মা l একজন হলেন নিরাকারী পিতা আর একজন হলেন সাকারী পিতা l নিরাকার পিতা শিববাবাকে পতিত পাবন বলা হয় l ব্রহ্মা বা সরস্বতীকে কিন্তু পতিত পাবন বলা হয় না l পতিত পাবন তো একজনই l এখানে দুইজনই হয়ে গেছেন l সবাই ডাকতে থাকে ....হে পতিত পাবন এসো তখন দুইজন বাবার নামই এসে যায় l শিববাবা হলেন রচয়িতা l তিনি এই দুনিয়ার স্থাপন করেন l তাহলে অবশ্যই তিনি প্রথমে ব্রহ্মাকেই রচনা করেন l বিষ্ণু আর শংকরকে কেউ প্রজাপিতা বলে না l ব্রহ্মাকেই প্রজাপিতা বলা হয় l শিববাবাই প্রজাপিতা ব্রহ্মার দ্বারা সমস্ত বাচ্চাদের দত্তক নেন l সবাই বলে আমরা শিব বাবার বাচ্চা l শিববাবা ব্রহ্মাবাবার মধ্যে প্রবেশ করে তোমাদের দত্তক নিয়েছেন l তিনিই সমস্ত আত্মাদের পবিত্র করেন কারণ সমস্ত আত্মারা এখন পতিত হয়ে গেছে l আত্মারা পতিত হওয়ার কারণে তোমরা শরীরও পতিত প্রাপ্ত করো l যেমনভাবে সোনাতে , রূপো , তামা এবং লোহা মিশিয়ে খাদ দেওয়া হয় তেমনই আত্মার মধ্যেও খাদ জমা হয় l আসলে আত্মারা পবিত্র অবস্থায় মুক্তিধামে থাকে , যেখানে শিববাবাও তাদের সঙ্গে থাকেন l এখন তোমরা শিববাবা আর প্রজাপিতা ব্রহ্মা , একজনকে বাবা আর একজনকে দাদা বলে ডাকবে l তোমরা তো সকলেই জানো যে সমস্ত মনুষ্যমাত্রই শিববাবার সন্তান l প্রথমে শিববংশী, তারপর ব্রহ্মাকুমার আর ব্রহ্মাকুমারী l শিববাবা আর ব্রহ্মাবাবা একসাথেই আছেন l শিববাবা , ব্রহ্মাবাবার মধ্যে বিরাজ করেন, তোমাদেরই ব্রাহ্মণ বানিয়ে রাজযোগ শেখান এবং মনুষ্য থেকে দেবতায় পরিণত করেন l দেবতারা সত্যযুগে থাকেন l দেবতাদের কিন্তু পতিত পাবন বা জ্ঞানের সাগর বলা হয় না l তাঁদের বাবাও বলা হয় না l এখন তোমরা বিষ্ণুপুরীর মালিক তৈরী হচ্ছো l বিষ্ণুর দুটি রূপ, লক্ষ্মী আর নারায়ণ ,এই কথা সাধারণ মানুষরা জানে না l যারা ভক্তি করে তাদের দুইজন বাবা হয় l সত্যযুগে কিন্তু একজনই বাবা থাকবেন l ওখানে কেউ এমন বলবে না যে পরম পিতা পরমাত্মা, দুঃখ হর্তা সুখ কর্তা , এসো আমাদের উদ্ধার করো l সত্যযুগে তো কেবল দেবী দেবতাদের রাজ্য l তাদের কেউ গড ফাদার বা উদ্ধারকর্তা বলবে না l সেখানে কেউ পতিত বা দুঃখী থাকে না ,তাই পতিত পাবনকে ডাকার প্রয়োজনও নেই l তোমরা সকলেই জানো যে আজ থেকে ৫০০০ বছর পূর্বে এই ভারতেই দেবী দেবতাদের রাজ্য ছিলো l তারপরে ১২৫০ বছর পরে রাম সীতার রাজত্বকাল এসেছিলো l বাবা তোমাদের এই কথা সিদ্ধ করে বলেন যে সত্য যুগ আর ত্রেতা যুগে তোমরা ২১ জন্ম গ্রহণ করেছিলে l ব্রাহ্মণ , দেবতা এবং ক্ষত্রিয় .......সব এই ভারতেই হয় l এখন বাবা এসে এই পুরোনো দুনিয়াকে নতুনে পরিবর্তিত করেন l তিনিই এই পরিবর্তনের কাজ করেন l তিনিই সকলকে কায়া কল্পতরু বানান l আবার তিনিই সকলকে অমর বানান l বাবাই এসে তোমাদের বাচ্চাদের অমরলোকের মালিক বানান l ভারতে যখন দেবতাদের রাজ্য ছিলো তখন এই ভারত অমরলোক ছিলো l তারপর তোমরা সিঁড়ি নামতে নামতে এই মৃত্যুলোকের মালিক হয়েছো l সবাই বলে আমার ভারত , তাহলে তো প্রজারাও মালিক হলো তাই না ? তোমরাও বলবে আমাদের ভারত l তোমরা বলবে আমরা ভারতের মালিক ছিলাম কিন্তু আমরা এখন নরকবাসী l দেবতারা বলবে আমরা হলাম স্বর্গবাসী l তোমরাও স্বর্গবাসী ছিলে তারপর ৮৪ জন্ম ভোগ করে নরকবাসী হয়েছো l শিববাবা এই ভারতেই জন্ম নেন l শিবরাত্রি বা শিবজয়ন্তীর কথা প্রচলিত আছে l কৃষ্ণজয়ন্তীও পালন করা হয় l ওই সময় কৃষ্ণের জন্ম মায়ের গর্ভে হয়েছিলো l সত্যযুগে কৃষ্ণ তো মায়ের গর্ভেই জন্মেছিলো l সত্যযুগে নতুন দুনিয়াতে কৃষ্ণ জয়ন্তী হয় তারপর কৃষ্ণও পুনর্জন্মে আসতে থাকে l বাবা কেবলমাত্র একজনের কথাই বলেন না l কৃষ্ণপুরীই হলো বিষ্ণুপুরী l রাজারাও যখন পুনর্জন্মের মাধ্যমে নামতে থাকে তখন রাজবংশেরও অবনতি হতে থাকে l এর সঙ্গে সঙ্গে রাজা , রাণী এবং প্রজা সবাই পুনর্জন্ম নিতে নিতে নামতে থাকে l যখন চন্দ্রবংশী রাজ্য আসবে তখন সূর্য্যবংশী রাজত্ব অতীত হয়ে যাবে l এই সমস্তকিছুই প্রথমে চন্দ্রবংশী তারপর পরিবর্তিত হয়ে বৈশ্যবংশীরা পাবে l এখন তোমরা জানো যে তোমারা হলে ব্রাহ্মণ কুলের শিরোমণি l এর উপরে থাকেন বাবা l তোমরা প্রথমে ব্রাহ্মণ ছিলে তারপর তোমরা শূদ্র অথবা চরণ হয়েছো l আবার এই শূদ্র থেকেই তোমরা ব্রাহ্মণের শিখা হয়ে যাবে l প্রথমে থাকেন শিববাবা l তারপর এই ব্রাহ্মণের শিখা l বাবাই তোমাদের ব্রাহ্মণ বানান l এখন তোমরা শিববাবাকে বাবা - বাবা বলে ডাকো l তোমরা সবাই জানো যে তোমরা সকলে ব্রহ্মার সন্তান .....ব্রাহ্মণ , ব্রাহ্মণী l সেই হিসাবে তোমরা শিববাবার নাতি নাতনি হলে l তোমরা সকলেই এক বাবার বাচ্চা l ভাই বোন কোনোরকম খারাপ কাজ করতে পারে না l এতোসব বাচ্চা, সবাই বাবা - বাবা বলে ডাকতে থাকে, তাহলে সবাই তো মিথ্যা হতে পারে না l সবার বাবাই হলেন নিরাকার শিব আর সাকারে প্রজাপিতা ব্রহ্মা l এক বাবার বাচ্চা সবাই তো ভাই বোনই হলো তাই না ? তোমাদের অবশ্যই পবিত্র থাকতে হবে l স্ত্রী পুরুষ কেমনভাবে পবিত্র থাকবে , সেইজন্য এইভাবে নাটকে লিপিবদ্ধ করা আছে l এখানে সকলেই ব্রহ্মা কুমার আর ব্রহ্মাকুমারী l কেউই শূদ্র কুমার বা কুমারী নেই l শূদ্ররা হলো পতিত ,এবং হালকা বুদ্ধির তারা কেউই বাবাকে জানে না l এদিকে সবাই ডাকতে থাকে ও গড ফাদার l কিন্তু তার কর্ম সম্বন্ধে কেউ কিছুই জানে কি ? নাম , রূপ , দেশ , কাল এগুলোও জানে কি ? তাঁর জীবন কাহিনী তোমরা বলো l যদি না জানো তাহলে তোমরা নাস্তিক হলে l তোমরা এই রচয়িতা আর রচনার আদি, মধ্য এবং অন্ত কিছুই জানো না l এই দুনিয়া হলো পতিত দুনিয়া l সত্যযুগকে পবিত্র দুনিয়া আর এই কলিযুগকে পতিত দুনিয়া বলা হয় l এই সময় এই দুনিয়া সম্পূর্ণ তমোপ্রধান হয়ে গেছে l তাই একে মারাত্মক বা চরম নরক বলা হয় l এরও কতগুলো ধাপ থাকে l দ্বাপর যুগ থেকে এই নরক শুরু হতে থাকে তারপর ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেতে থাকে l ভক্তিও প্রথমে সতোপ্রধান থাকে তারপর সতো, রজ এবং তমোতে আসতে থাকে l তোমরা জানো যে যেখানে তিন রাস্তার মিলন হয় তাকে তেমাথা বলা হয় l অনেকেই সেখানে তেল চড়ায় এবং মাথাও ঝোকায় l এখন ভাবতে হবে কোথায় শিব বাবার পুজো আর কোথায় এই তেমাথার পুজো l এই পুজোকে বলা হয় তমোপ্রধান ভক্তি l জলেরও পূজা করা হয় পতিত পাবনী গঙ্গা বলে মানুষ গাইতেও থাকে l এখন ভাবার কথা পতিত পাবন কে ? গঙ্গা নদী কেমন করে পতিত পাবন হবে l সেখানে তো কেবল জল আছে l একমাত্র শিববাবা হলেন পতিত পাবন l শিবজয়ন্তী এই ভারতেই পালন করা হয় তাহলে শিববাবার জন্মভূমি এই ভারতই হলো l তিনি আসেন পতিত মানুষকে পবিত্র করার জন্য l শিববাবা ব্রহ্মার শরীরে এসে মানুষকে দেবতায় পরিণত করেন l এখানে তোমরা আসো পতিত থেকে পবিত্র হওয়ার জন্য l তোমাদের যেমন দুটো হাত থাকে তেমনই দেবতাদেরও দুটো হাতই থাকে l কোনো মানুষই চার বা আট হাত বিশিষ্ট হয় না l এইসকল অলংকার বা চতুর্ভুজ যা দেখানো হয়েছে সবই প্রবৃত্তিমার্গকে দেখানোর জন্য l লক্ষ্মী নারায়ণের রাজত্বকেই বিষ্ণুপুরী বলা হয় l বিষ্ণু থেকেই বৈষ্ণব শব্দটি এসেছে l দেবতারা সকলেই বৈষ্ণব ছিলেন l বল্লভাচারী বৈষ্ণবরা হলেন নিরামিষাশী, কিন্তু তারা নির্বিকারী নন l তাদের বড় বড় বাড়ি থাকে l তারা বৈষ্ণব কথার অর্থই জানে না l যারা বিষ্ণুপুরীতে থাকে তাদেরই প্রকৃতভাবে বৈষ্ণব বলা হয় l পবিত্র মানুষকেই বৈষ্ণব বলা হয় l মানুষ রাধা কৃষ্ণের আলাদা মন্দির আবার লক্ষ্মী নারায়ণের আলাদা মন্দির বানিয়ে দিয়েছে l এদের মধ্যে কি তফাত ভারতবাসী তা জানেই না l রাধা কৃষ্ণই পরবর্তীকালে বিবাহের পর লক্ষ্মী নারায়ণ হয় এই বিষয় কেউই জানে না l রাধা কৃষ্ণ হলো তাঁদের ছোটোবেলার রূপ l আর লক্ষ্মী নারায়ণ হলো তাঁদের বড় অবস্থার রূপ l তোমরা দেখো, লক্ষ্মী নারায়ণের ছোটোবেলার কোনো ছবিই নেই l মানুষ লক্ষ্মী নারায়ণকে সত্য যুগে আর রাধা কৃষ্ণকে দ্বাপর যুগে দেখিয়ে দিয়েছে l এখন তোমরা রচয়িতা শিববাবা আর তাঁর রচনার আদি, মধ্য এবং অন্ত সম্বন্ধে জেনে গেছো l বাবা তোমাদের এই সৃষ্টিচক্রের ঝাড়ের রহস্যের কথাও বুঝিয়ে বলেন l এই বিশ্ব নাটকের রহস্যও তোমাদের বুঝিয়ে বলেন l এই ঝাড় দেখলে বুঝতে পারবে যে শংকরাচার্য তো কলিযুগে এসেছেন l সন্ন্যাসীদের রাজত্বতো সত্যযুগে থাকতেই পারে না l কারণ সত্যযুগে তাঁদের কোনো প্রয়োজন নেই l সমস্ত আত্মারা ভগবানের সন্তান, তাই সকলেরই স্বর্গবাসী হওয়ার প্রয়োজন l কিন্তু স্বর্গবাসী সবাই হয় না l কেবলমাত্র দেবতারাই স্বর্গবাসী হন l এখন তোমরা ব্রাহ্মণবংশী হয়েছো, এরপরে তোমরাই দেবতা হবে l তাই অবশ্যই তোমাদের পবিত্র হতে হবে l
তোমরা জানো যে ছোটো বড় অনেক ব্রহ্মাকুমার - কুমারী আছে l সবাই বলে যে , বাবা আমরা তোমার সন্তান l আমরা ব্রাহ্মণ l আর এনারা হলেন বাপদাদা l আদিদেব ব্রহ্মা আর শিববাবা l তোমরা জানো যে তোমরা সকলেই ব্রহ্মাবাবা এবং শিববাবার সামনে এসেই বসো l বাবা তোমাদের বলেন যে, তোমরা যদি বাবাকে স্মরণ করো তাহলে তোমরা পবিত্র হতে পারবে l তোমরা শিববাবার থেকেই এই বর্ষা বা সম্পত্তি গ্রহণ করো l শিববাবা একাধারে তোমাদের বাবা আবার পতিত পাবন এবং গুরুও l এখন এই যুগ হলো সঙ্গম যুগ l এই যুগ হলো পতিত থেকে পবিত্র হওয়ার মেলা l পতিতপাবন বাবার দ্বারাই তোমরা পবিত্র হতে পারবে l সঙ্গমের অর্থ হলো নদী আর সাগরের মিলন বা মেলা l কিন্তু নদীর মেলা তো হয় না l এখন জ্ঞান সাগর আর তোমাদের আত্মাদের মেলা বা মিলন হয়েছে l তোমরা সবাই জ্ঞান সাগর শিববাবার কাছে এসেছো l তোমরা জ্ঞানগঙ্গারা সকলেই এই জ্ঞান সাগর শিববাবার থেকেই নির্গত হয়েছো l তোমরা এই জ্ঞান স্নান করেই পবিত্র হও l তোমরাই যোগ শেখো এবং অন্যকে শেখাও l সাগরের পরিচয় তোমরাই দিয়ে সকলকে তোমরা এই মেলায় নিয়ে আসো l এখন তোমরা যখন ব্রাহ্মণ হয়েছো, এখন তোমাদের তিনজন বাবা হয়েছেন l যেমন তোমাদের লৌকিক পিতা আছেন,ঠিক তেমনই প্রজাপিতা আর আছেন শিববাবা l ভক্তিমার্গে কিন্তু দুজন পিতা থাকেন l আবার সত্যযুগে তোমাদের একজন পিতা থাকবেন l এই সকলই সঠিকভাবে বোঝার কথা l এখন তোমাদের আত্মা বলে যে ......আমাদের তো শিববাবা ছাড়া দ্বিতীয় আর কেউই নেই l মিত্র সম্বন্ধী থাকা সত্বেও তোমরা বলো যে .....আমাদের তো একমাত্র শিববাবাই আছেন l তাঁর স্মরণেই তোমাদের পতিত থেকে পবিত্র হতে হবে l আত্মারা জানে যে, শিববাবাই হলেন তাদের একাধারে বাবা , শিক্ষক এবং সত্ গুরুও l তোমাদের আত্মাকে বাবা এখন নিতে এসেছেন l ব্রহ্মার শরীরে প্রবেশ করে তিনিই তোমাদের পবিত্র করেন l তোমাদের নিয়ে যাবার জন্যই বাবা এখন এসেছেন l তোমাদের সকলকে মৃত্যুর পরে তিনিই নতুন জীবন দান দিতে এসেছেন l নরকবাসী থেকে স্বর্গবাসী হওয়ার জন্য অবশ্যই মৃত্যুকে বরণ করতে হবে l তোমাদের এই দেহের বিনাশ হয়ে যাবে আর বাবা তখন তোমাদের আত্মাকে নিয়ে যাবেন l বাবা বলেন যে .....আমি তোমাদের নতুন জীবনদান দিই l এ হলো মহাভারতের যুদ্ধ l এই যুদ্ধে সকলের বিনাশ হবে l না হলে বাবা কেমন করে তোমাদের নিয়ে যাবেন l বাবা সমস্ত আত্মাদের পবিত্র বানিয়ে তবেই ঘরে নিয়ে যান l সেই ঘর হলো শান্তিধাম l সত্যযুগ আসতে গেলে কলিযুগের অবশ্যই বিনাশ হবে আর তাই এই মহাভারতের লড়াইয়ের এতো নাম l এই মহাভারতের লড়াই এই সঙ্গম যুগেই হয় যখন তোমরা মানুষ থেকে দেবতায় পরিণত হও l আচ্ছা l
মিষ্টি - মিষ্টি হারানিধি(সিকীলধে) বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণ , ভালোবাসা আর সুপ্রভাত l রুহানি বাবার রুহানি বাচ্চাদের নমস্কার l
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
1) জ্ঞান সাগরে জ্ঞান স্নান করে নিজেকে পবিত্র বানাতে হবে l মিত্র সম্বন্ধীদের সঙ্গে থাকলেও বুদ্ধিতে যেন এই কথা সর্বদা থাকে, আমার তো শিববাবা ছাড়া দ্বিতীয় আর কেউই নেই l
2) বিষ্ণুপুরীতে যাবার জন্য সত্যিকারের বৈষ্ণব অর্থাৎ পবিত্র হতে হবে l এই নরকে থেকেও জীবন্মৃত হয়ে এখান থেকে নিজের বুদ্ধিকে সরিয়ে বুদ্ধির যোগ স্বর্গের দিকে রাখতে হবে l
বরদান :- সর্বদা মর্যাদার গন্ডীতে থাকার প্রচেষ্টা করে মর্যাদা পুরুষোত্তম হও l
যে সব বাচ্চারা নিজেদের এক বাবা অর্থাত্ এক রামের সীতা মনে করে মর্যাদার গন্ডীর ভিতরে থাকে বা থাকার প্রচেষ্টা করে, তারা সর্বদা হাসিমুখে থাকতে পারে l তাই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত যে স্বমান বা মর্যাদা প্রাপ্ত করেছো, বুদ্ধিতে তার ধারণা স্পষ্ট রাখো, নিজেকে সত্যিকারের সীতা মনে করে মর্যাদার গন্ডীর ভিতরে যদি থাকতে পারো, তাহলেই মর্যাদা পুরুষোত্তম হতে পারবে l
স্লোগান :-
মাত্রাতিরিক্ত সেবা না করে সেবা আর পুরুষার্থের ভারসাম্য বজায় রাখো l