BK Murli 29 June 2016 Bengali
২৯-০৬-১৬ প্রাত: মুরলি ওম্ শান্তি "বাপদাদা " মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা - তোমরা এখন সত্যিকারের রাজযোগী , তোমাদের এখন রাজঋষি বলা যেতে পারে ,রাজঋষি হল পবিত্র "
প্রশ্নঃ -
তোমরা বাচ্চারা , মনুষ্যকে মায়ারূপী রাবণের চোরাবালি থেকে কবে উদ্ধার করবে ?
উত্তরঃ -
যখন তোমরা নিজেরা সেই চোরাবালি থেকে বেরিয়ে আসবে l চোরাবালি থেকে বেরিয়ে আসতে সমর্থ বাচ্চাদের এইরকম নিদর্শন থাকে -ইচ্ছা মাত্রম্ অবিদ্যা l এক বাবা ছাড়া অন্য কিছুই মনে আসেনা l ভালো কাপড় পরা বা ভালো জিনিস খাওয়া , এসবের কোনও কিছুতেই ইচ্ছে বা লোভ থাকেনা , তোমরা পুরোপুরি বনের জীবন যাপন করছ l এই শরীরকে ভুলে থেকে , কিছুই আমার নয় , আমি আত্মা - এইরকম আত্ম -অভিমানী বাচ্চাই রাবণের চোরাবালি থেকে মনুষ্যকে উদ্ধার করতে পারে l
গীত :-
তুমি ভালোবাসার সাগর . . .
ওম্ শান্তি l
একটা সময় ছিল যখন গান বাজালে বাচ্চাদের গানের অর্থ জিজ্ঞাসা করা হত l এখন বলতো তোমরা কবে থেকে রাস্তা ভুলেছ ? (কেউ বলছে দ্বাপর থেকে তো কেউ বলছে সত্যযুগ থেকে ) যারা বলে দ্বাপর থেকে ভুলেছে তারা ভুল বলে l সত্যযুগ থেকেই রাস্তা ভুলেছ l পথপ্রদর্শককে তোমরা এখন পেয়েছ l সত্যযুগে পথ -নির্দেশককে কেউ জানত না l ওখানে বাবাকে কেউই জানত না l একেবারে ভুলে গেছে l ভুলে যাওয়াও ড্রামাতে গাঁথা আছে l তাই তো এখন আবার রাস্তা দেখাতে এসেছেন l বলা হয় যে , প্রভু রাস্তা দেখাও l আমরা সত্যযুগ থেকে বাবাকে ভুলে আছি l বাবা প্রশ্ন করেন বাচ্চাদের বুদ্ধিতে শান দিতে অর্থাত্ বুদ্ধিকে সবসময় কার্যকরী রাখতে l এই জ্ঞান একেবারে অনন্য , জ্ঞানের সাগর হলেন বাবা l সামনাসামনি বাবা বুঝিয়ে দেন -জ্ঞানের সাগর , সুখের সাগর আমিই l তোমরাও জানো অনাদিকাল ধরে এক বাবাই পতিত -পাবন l ভক্তিমার্গেও এই কথা মানা হয় l পবিত্র দুনিয়াই হলো শান্তিধাম আর সুখধাম l সৃষ্টির অর্ধভাগ সুখধাম আর বাকি অর্ধভাগ দুঃখধাম l বাচ্চারা এইসব যথার্থভাবে জানে l বাবা ভালোবাসার সাগর তাইতো সবাই ফাদার বলে ডাকে কিন্তু উঁনি কে , কিভাবে আসেন তা সকলে ভুলে যায় l পাঁচ হাজার বছরের কথা , প্রথম থেকেই এই দেবী -দেবতাদের রাজ্য ছিল l সত্যযুগে সদগতি অর্থাত্ অতিশয় উত্তম অবস্থায় সবকিছু বিদ্যমান থাকে সেখানে দুর্গতি কিভাবে আসতে পারে ? একথা বাবাই এসে বুঝিয়ে দেন , দ্বাপর থেকে তোমাদের দুর্গতির শুরু আর তখন থেকেই আমাকে ডাকতে থাকো l তোমরা জানো যে , এটা নতুন কোনো কথা নয় l বাবা প্রতি কল্পে আসেন l এখন নিরাকার বাবা আত্মাদের বুঝিয়ে দেন l কেউ আত্মরূপ জানেনা l এইভাবে কেউ কখনও বলবে আত্মাতেই সারা পার্ট সাজানো আছে l কখনো বলবেনা আমি অনেকবার এই একই ভূমিকায় আমি আমার ভূমিকা পালন করেছি(পার্ট প্লে) l ড্রামার ব্যাপার ওরা জানেনা l কল্পের আয়ু লাখ লাখ বছরের বলছে কিন্তু এটা তো ড্রামাই সেটা বুঝতে পারেনা l ড্রামা ফিরে ফিরে আসে এটা তো জানতে হবে l সামনাসামনি বসে এই জ্ঞান বাবা বাচ্চাদের দিচ্ছেন l তোমরা জেনেছ যে , শিববাবা আমাদের তাঁর সন্তানের স্বীকৃতি দিয়ে ব্রহ্মাবাবার দ্বারা জ্ঞানদান করে ব্রাহ্মণ উপাধিতে ভূষিত করেছেন l ইনিও শিববাবারই সন্তান l স্ত্রীও আছে l বাচ্চাদের অনেক সামলাতে হয় l একলা পুরুষের পক্ষে বাচ্চাদের সামলানো অসুবিধেজনক বলে সরস্বতী অর্থাত্ মাম্মাকে সহযোগী বানিয়েছেন l তাঁকে বলা হয়েছে বাচ্চাদের সামলানোর জন্য l এইসব কথা শাস্ত্রে নেই l এটাই বাস্তব l বাবা-ই রাজযোগ শেখান , যাঁদের রাজযোগ শিখিয়েছেন তাঁরা রাজা হয়েছেন l পাঁচ হাজার বছর বাদে- বাদে যে কল্পের শুরু হয় সেই আদি সনাতন দেবী -দেবতাদের রাজত্বে এসে আদি থেকে অন্ত পর্য্যন্ত পুরো ৮৪ জন্মের চক্র সম্পূর্ণ করেন l বাইবেল , কোরান , বেদ -শাস্ত্র ইত্যাদি অনেকে পড়ে কিন্তু কিছু সঠিকভাবে বুঝতে পারেনা l এখন তোমরা তত্ত্বযোগী হওনি l তোমাদের বাবার সাথে যোগ অর্থাত্ বাবা-ই সদা স্মরণে আছেন l তোমরা এখন রাজযোগী , রাজঋষি অর্থাত্ যোগীরাজ হচ্ছ l যোগীকে পবিত্র বলা হয়ে থাকে l স্বর্গের রাজত্ব নেওয়ার জন্য তোমরা যোগী হয়েছ l বাবা প্রথমে পবিত্র হতে বলেন l যোগী জীবনই পবিত্র জীবন l তোমরা সবাই রাজযোগী , এইসব তোমাদের -ব্রহ্মামুখ বংশাবলী ব্রাহ্মণদের কথা l তোমাদের রাজযোগ শেখানো হচ্ছে , তোমরা তো তাহলে স্টুডেন্ট হলে ! টিচার কখনও স্টুডেন্টদের ভুলতে পারেন ? তোমরা তো জেনেছ শিববাবা তোমাদের পড়াচ্ছেন l কিন্তু মায়া তবুও সব ভুলিয়ে দেয় l তোমরা তোমাদের লেখাপড়া শেখানোর টিচারকে ভুলে যাও l এখানে ভগবান পড়াচ্ছেন - এই কথা বুঝতে পারলে পড়ার নেশায় বুঁদ হয়ে থাকবে l স্কুলে আই .সি .এস্ .পড়তে প্রবল ইচ্ছা থাকে l তোমরা -বাচ্চারা তো ২১ জন্মের জন্য এই রাজযোগের পড়া পড়ছ l এই পড়া তো আবারও পড়তে হবে l রাজবিদ্যাও অর্জন করতে হবে , ভাষা ইত্যাদি যে শিখতে হবে l তোমরা বাচ্চারা জানো সত্যযুগ থেকে আমরা ভুলতে শুরু করি l তারপর একেক জন্মে একেক ধাপ নীচে নামতে থাকি l এখন তোমাদের সব জ্ঞান হয়ে গেছে তোমরা বুঝতে পারো কিভাবে আমরা উঠি আর কিভাবে আমরা আবার নামি l এই সিঁড়ি যাথার্থ ভাবে স্মরণ করো l ৮৪ জন্মের চক্র সম্পূর্ণ হয়েছে এবার আমাদের ঘরে ফেরার পালা l তাই খুশি হয় , এই হলো বেহদের নাটক l আত্মা অনেক ছোট l পার্ট প্লে করতে করতে কাহিল হয়ে যায় তখনই বলে বাবা বিশ্রাম আর সুখ -শান্তি পাওয়ার রাস্তা দেখাও l তোমরা সুখধামে থাকবে তো তোমাদের জন্য সেখানে সুখ -শান্তিও থাকবে l ওখানে কোনো ঝামেলা বা সংকট থাকেনা l শান্তিই আত্মার স্বভাব l শান্তির দুটো স্থান - শান্তিধাম আর সুখধাম l দুঃখধামে অশান্তি লেগেই থাকে l এসব তো পাঠের পড়া , তোমরা জানো বাবা আমাদের শান্তিধাম ঘুরিয়ে সুখধামে নিয়ে যাচ্ছেন l তোমাদের বলতে হবেনা , তোমরা তো জানো আমরা এখানে পার্ট প্লে করতে এসেছি , সম্পূর্ণ হলে আবার ফিরে যাব l এটাই তো খুশি l কিন্তু এই খুশি শান্তিধামের নয় l ঘরে ফেরার আনন্দে আমরা খুশি হই l সব বাচ্চারা জানে বাবাকে স্মরণ করলে বিকর্ম বিনাশ হবে l কেউ কেউ বলে আমার মনের শান্তি হয়েছে l এটা ভুল কথা l আমরা বাবাকে স্মরণ করি এই কারণে যে আমাদের বিকর্ম বিনাশ হয় l মন তো শান্ত থাকতে পারে না l কর্ম বিনা মন থাকতে পারেনা l তাছাড়া মনে অনুভূত হয় আমি বাবার থেকে পবিত্রতা সুখ -শান্তির সম্পদ নিচ্ছি , খুশিই তো হওয়া উচিত্ l এখানে তো হচ্ছে দুঃখধাম l এখানে সুখ থাকতে পারেনা l মানুষ সুখধাম -শান্তিধাম ভুলে গেছে l সেইজন্য যাদের প্রচুর পয়সা আছে তারা ভাবে আমরা সুখে আছি , সন্ন্যাসী যাঁরা ঘর -সংসার ছেড়ে বনে চলে যায় তারা ভাবে আমরা সুখে আছি l কোনো সমস্যা নেই l মন শান্ত হয় কিন্তু অল্প সময়ের জন্য l আত্মার স্বধর্ম হলো শান্তি , তাতেই তোমরা শান্তিতে থাক l এখানে ভোগ -বাসনার পথে আসতেই হয় l ভূমিকা তো পালন করতেই হবে , এখানে আসাই কর্ম করতে l কর্মের মধ্যে আত্মাকে আসতেই হয় l তোমরা বাচ্চারা তো বুঝতেই পারো এই বোঝানো -শেখানো বেহদের বাবা করছেন l নিরাকার ভগবান উবাচঃ - তোমরা এখন জেনেছ আমরা আত্মা , আমাদের বাবা পরম আত্মা l পরম আত্মা মানেই পরমাত্মা l তাঁকে আত্মারাই ডাকে l তিনি বাবা , সকলের সদগতি দাতা l বাবা এখন সবসময় বলছেন বাচ্চারা দেহী -অভিমানী হও l এটুকুই অধ্যবসায় l অর্ধ কল্প ধরে যে খাদ পড়ছে তা এই স্মরণেই দূরীভূত হবে l তোমাদের খাঁটি সোনা হতে হবে l এখন তোমরা সেই গহনাতে পরিণত হয়েছ যে গহনা বানাতে খাঁটি সোনায় খাদ মেশাতে হয় , আসলে তোমরা খাঁটি সোনাই ছিলে পরে তোমাদের ওপর খাদ পড়তে থাকে l এখন তোমরা বুদ্ধি দিয়ে বুঝতে পারো আমরা যে যার পার্ট প্লে করেছি l এবারে আমরা প্রিয়তমের ঘরে ফিরে যাব l বিদেশ থেকে স্বামী ঘরে ফিরে আসলে যেরকম আনন্দ হয় তোমাদের এখন সেরকমই আনন্দ হচ্ছে , তোমরা জেনেছ বাবা আমাদের জন্য স্বর্গের সুখ এনেছেন l এই হচ্ছে বেহদের বাবার উপহার - বেহদের বাদশাহী অর্থাত্ সদগতি l সন্ন্যাসীরা উপহাররূপে মুক্তি চায় l কারো মৃত্যু হলে বলে স্বর্গবাসী হয়েছে l সন্ন্যাসীরা বলে জ্যোতি জ্যোতির সাথে লীন হয়ে গেছে , যেখানে সবাই এসে মিলে যাবে l ওটা তো থাকার জায়গা , যেখানে সব আত্মরা থাকে l বাবাও ওখানে থাকেন , তিনিও বিন্দু l কারোর বিন্দু সাক্ষাত্কার হলে বুঝতেই পারবেনা l বাচ্চারা অনেকবার বলেছে বাবা বিন্দুরূপে স্মরণ করতে অসুবিধে হয় l বিন্দুকে কিভাবে স্মরণ করব l অর্ধ কল্প তো বড় শিবলিঙ্গের স্মরণ করেছি l সেটাও বাবা বুঝিয়ে দেন l বিন্দুর পূজা তো সম্ভব হয়না , তাহলে বিন্দুর মন্দির কিভাবে বানাবে ? বিন্দু তো দেখাই যাবেনা , সেইজন্য বড় করে শিবলিঙ্গ বানানো হয় l বাকি আত্মাদের শালিগ্রাম-শিলা সেতো অনেক ছোট ছোট বানানো হয় , ডিম্ব-সদৃশ l তারপরে বলবে প্রথমেই কেন বলা হয়নি পরমাত্মা বিন্দুরূপ l বাবা বলেন সেইসময়ে এই কথা বলার পার্ট ছিলনা l আই . সি . এস .পরীক্ষার আগে কি তোমরা পড়ো ? না। পড়াশোনার তো একটা পদ্ধতি আছে কেউ এই ধরনের কথা জিজ্ঞেস করলে তোমরা বলতে পারো - ঠিক আছে বাবাকে জিজ্ঞেস করে বা আমাদের বড় টিচার দিদি আছেন তাঁকে লিখে জিজ্ঞেস করে বলতে হবে l বাবা যা বলার বুঝিয়ে দেবেন অথবা পরে পরে সময়মতো নিজেরাই বুঝে যাবে l বাবা একবারই তো শোনাবেন না! এই সবকথাই নতুন l তোমাদের বেদ -শাস্ত্রে যা আছে তার সার বাবা ভালো করে বুঝিয়ে দেন l ভক্তি মার্গের এই সকল কথা ড্রামাতে লিপিবদ্ধ আছে l তবুও তোমাদের পড়তেই হবে l ভক্তির এই পার্ট প্লে করতেই হবে l পতিত হওয়ার ভূমিকাও পালন করতে হবে l বলা হয় ভক্তির চোরাবালিতে আটকে গেছে l বাইরের আড়ম্বর খুব সুন্দর l যেন মরুভূমিতে জল l ভক্তির আকর্ষণও অনেক l বাবা বলেন এ হচ্ছে মরুভূমির জল l (মৃগতৃষ্ণা) মরীচিকার পেছনে ছুটতে ছুটতে চোরাবালিতে পড়ে যায় l তারপর এর থেকে বেরিয়ে আসতে মুশকিল হয় , একেবারে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে যায় l অন্যকে বের করে আনতে গিয়ে নিজেই বন্ধনে জড়িয়ে যায় l এরকম অনেকেরই হয়েছে l আশ্চর্য রকমের শ্রোতা , বক্তা , অন্যের মধ্যে দৃঢ় বিশ্বাস জাগিয়ে ভক্তির বন্ধন থেকে মুক্ত করতে সমর্থ এরকম অনেকে চলতে চলতে নিজেই আটকা পড়ে গেছে l ভালো ভালো পুরুষার্থীরাও এই চোরাবালির স্রোতে ভেসে গেছে , তাদেরকে আবার ফিরিয়ে আনা খুব সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় l বাবাকে ভুলে যায় , সেইজন্য এই চোরাবালি থেকে বেরিয়ে আসতে অনেক পরিশ্রম হয় ! যতই বোঝানো হোক বুদ্ধিতে বসেনা l এখন তোমরা বুঝতে পারো আমরা মায়ারূপী রাবণের চোরাবালি থেকে কতটা বেরিয়ে আসতে পেরেছি l যতখানি বেরিয়ে আসতে পারবে খুশির অনুভবও ততখানিই হবে l যে নিজস্ব বুদ্ধিতে বেরিয়ে আসে তার অন্যকে বার করে আনার শক্তি থাকে l তীর চালনায় (জ্ঞান রূপী তীর) কেউ পারদর্শী হয় , কেউ -বা একটু কমজোর। ভীল আর অর্জুনের উদাহরণ দেওয়া হয় । অর্জুন ছিল সর্বদা তার গুরুর সাথে । অর্জুন একজনকে বলা হয় না, যে বাবার হয়ে বাবার সাথে থাকে, আর অপরজন হল যে বা যারা বাইরে থাকে, উভয়ের মধ্যে প্রতিযোগিতা করানো হয়। ভীল অর্থাৎ যারা বাইরে (যারা এই ঈশ্বরীয় জ্ঞানের বাইরে রয়েছে তাদের প্রতীক হল ভীল এবং বাবার হয়ে গিয়ে বাবার সাথে যারা থাকে, তাদের প্রতীক হল অর্জুন) যারা থাকে। দৃষ্টান্ত তো একেরই দেওয়া হয় l কিন্তু এই কথা তো অনেকের l তীরও এই জ্ঞানের l প্রত্যেকে নিজেকে বুঝতে পারে আমরা কে কতটা বাবাকে স্মরণ করি l আবার কারোর তো স্মরণই হয়না l ভালো জিনিস খাওয়ার বা পরার লোভ করা ঠিক নয় l এখানে সব ভালো জিনিসের চাহিদা থাকলে ওখানে (সত্যযুগে ) কম হয়ে যাবে l আমাদের তো এখানে বনবাসের জীবন ধারণ করে চলতে হবে l বাবা বলেন তোমরা এই শরীরকে ভুলে যাও l এই শরীর তো পুরানো , তমোপ্রধান l তোমরা স্বর্গের মালিক হতে চলেছ , মনে রাখতে হবে ইচ্ছা মাত্রম্ অবিদ্যা l বাবা বলেন - তোমরা এখানে গয়না ইত্যাদি পোরোনা , এরকম কেন বলেন ? এরও অনেক কারণ আছে l কারোর গয়না হারিয়ে গেলে বলবে ওখানে বি. কে. দের দিয়ে এসেছে আর তাছাড়া রাস্তায় চোর -বাটপারেরাও ছিনিয়ে নিতে পারে l আজকাল মহিলা লুটেরাও অনেক হয়েছে l মেয়েরাও চুরি -ডাকাতি করছে l দুনিয়ার হাল কি হয়েছে l তোমরা বুঝতে পারছ এই দুনিয়া একেবারে গণিকালয় হয়ে উঠেছে l আমরা এখানে শিবালয়ে বসে আছি - শিববাবার সাথে l তিনি সচ্চিদানন্দ -সত্ -চৈতন্য -আনন্দ স্বরূপ l আত্মারই মহিমা , আত্মাই বলে আমি প্রেসিডেন্ট হয়েছি , আমি অমুক হয়েছি l আর তোমাদের আত্মা বলে আমরা ব্রাহ্মণ হয়ে বাবার থেকে বিশ্বের রাজ্যভার নিচ্ছি l আত্ম -অভিমানী হয়ে থাকতে হবে , এতেই যা পরিশ্রম লাগে l এটা আমার অমুক ,এটা আমার তমুক -এগুলো মনে থাকে , আমরা আত্মা ভাই -ভাই একথা ভুলে যায় l এখানে এই আমিত্ব বোধ ছাড়তে হবে l আমি আত্মা , একে আত্মাই জানে l বাবা বোঝাচ্ছেন - আমিও শুনে যাচ্ছি l প্রথমে আমি শুনি , যদিও-বা আমিও শোনাতে পারি কিন্তু বাচ্চাদের কল্যাণ হেতু বলি - তোমরা সবসময় জানবে শিববাবা তোমাদের বোঝাচ্ছেন l বিচার সাগর মন্থন করা বাচ্চাদের কাজ l যেমন তোমরা করছ তেমন আমিও করছি l তা না হলে প্রথম নম্বরে কিভাবে যাবে কিন্তু নিজেকে গুপ্ত রাখতে হয় l আচ্ছা l
মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি (সিকিলধে)বাচ্চাদের প্রতি মাতা -পিতা বাপদাদার স্মরণ -স্নেহ আর সুপ্রভাত l রুহানি বাবার (পরমাত্মা পরমপিতা ) রুহানি বাচ্চাদের নমস্কার l
ধারণার জন্যে মুখ্য সার :-
১) আমার-আমার এই আমিত্বকে ছেড়ে নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করতে হবে l আত্ম -অভিমানী হওয়ার মেহনত করতে হবে l এখানে একদম বনবাসের জীবনে থাকতে হবে l কোনও প্রকার পরার বা খাওয়ার ইচ্ছা থেকে ইচ্ছা মাত্রম্ অবিদ্যা হয়ে যাবে l
২) নিজের পার্ট প্লে করাকালীন কাজ করতে করতে নিজের শান্তি স্বধর্মে স্থিত থাকতে হবে l শান্তিধাম আর সুখধামকে স্মরণ করতে হবে l এই দুঃখধামকে ভুলে যেতে হবে l
বরদান :-
স্ব -স্থিতির দ্বারা সর্ব পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে সমর্থ অব্যক্ত স্থিতির অভ্যাসী ভব (হও )
যখন অব্যক্ত স্থিতির অভ্যাস স্বভাবে পরিবর্তিত হবে তখন স্ব স্থিতির দ্বারা সবরকম পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে পারবে l আর এই স্বভাব আদালতে (ধর্মরাজের কাছে ) যাওয়া থেকে বাঁচাবে , এইজন্য এই অভ্যাসকে যখন স্বাভাবিক আর নিজের প্রকৃতি বানাবে তখন প্রাকৃতিক বিপর্যয় আসবে কেননা যখন সম্মুখীন হতে সমর্থ স্ব স্থিতির দ্বারা সবরকম পরিস্থিতিকে পার করার শক্তি ধারণ করতে পারবে তখনই পর্দা উঠবে অর্থাত্ সত্যযুগের দ্বার খুলবে l এইজন্য পুরানো সব অভ্যাস থেকে ,পুরানো সংস্কার থেকে ,পুরানো কথা থেকে - সম্পূর্ণ বৈরাগ্য চাই l
স্লোগান :-
নিজেকে নিমিত্ত করণহার নিশ্চয় করো তাহলে কোনো রূপ কর্মে বাধা আসতে পারবে না l