BK Murli 1 August
2016 Bengali
০১-০৮-১৬ প্রাত: মুরলী ওম্ শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা - যে কোনো পরিস্থিতি বা যে কোনো কথায় সহনশীলতা ধারণ করো, নিন্দা, স্তুতি, জয় -পরাজয় সবেতেই সমান থাকো, আর শোনা কথায় কখনো বিশ্বাস ক'রো না l"
প্রশ্ন :-
আত্মা কোন্ সহজ উপায়ে চড়তি কলার দিকে আরও অগ্রসর হতে সক্ষম হবে ?
উত্তর :-
এক বাবার থেকেই শোনো , দ্বিতীয় কারোর নয় l অনর্থক পরচিন্তন আর বাইরের দুনিয়ার কথায় নিজের সময় নষ্ট করো না, তবে আত্মা সদা চড়তি কলায় থাকবে l বিপরীত কথা শুনে , এবং তার উপর বিশ্বাস করে ভালো বাচ্চারাও অধঃপতিত হয়েছে , সেইজন্য তোমাদের খুব সাবধানে চলতে হবে l
ওম্ শান্তি l
মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চাদের এখন স্মৃতি জাগ্রত হয়েছে যে বরাবর অর্ধেক কল্প আমরা বাবাকে স্মরণ করেছি, যখন থেকে রাবণ রাজ্য শুরু হয়েছে l আবার এমনও নয় যে কেউ পুরো অর্ধেক কল্প বাবাকে স্মরণ করেছে , না l যখন যখন দুঃখ অতিমাত্রায় বেড়েছে , তখনই তোমরা বাবাকে স্মরণ করেছ l এখন তোমরা জানতে পেরেছ যে, ভক্তিমার্গ থেকে আমরা নীচে নামতে শুরু করেছি l এই নাটকের রহস্যও তোমাদের বুদ্ধিতে আছে l মুখে কিছু বলারও দরকার নেই , আমরা বাবার হয়ে গেছি, এইজন্য অনেক জ্ঞানেরও দরকার নেই l তোমরা বাবার হয়েছ , তবে তো বাবার সম্পত্তিরও মালিক হয়ে গেছ l কর্মেন্দ্রিয় দিয়ে কিছুই বোঝাতে হবে না l ভক্তিমার্গে তোমরা ভগবানকে সন্তুষ্ট করার জন্য যজ্ঞ - তপ, দান - পুণ্য কতই করেছো l যেখানেই যাও সব জায়গা তীর্থ, মন্দির অনেকই আছে l এমন কোনো মানুষ নেই যারা ভারতেই সমস্ত তীর্থস্থান আর মন্দির ঘুরে শেষ করতে পেরেছে l যদি কেউ ঘুরেও থাকে তবুও সারাজীবনে কিছুই পায় না l সেখানে ঘন্টা , কাঁসর ঘন্টা ইত্যাদি বিভিন্ন ধ্বনিতে মন্দির প্রাঙ্গণ মুখরিত থাকে l এখানে তেমন কোনো শব্দের ব্যাপারই নেই l এখানে কোনো গান গাওয়া বা হাততালি দেবার বিষয় থাকে না l মানুষ কি -কি না করছে , বিশাল কর্মকান্ড চলছে l আর এখানে তো তোমরা বাচ্চারা শুধুমাত্র বাবাকেই স্মরণ করবে, আর কিছুই তোমাদের করতে হবে না l পারিবারিক জীবনে থেকে সমস্ত কর্তব্য করে এক বাবাকেই তোমাদের স্মরণ করতে হবে l তোমরা জানো যে আমরা এখন দেবতা হতে চলেছি l এখানেই তোমাদের দৈবী গুণ ধারণ করতে হবে l তোমাদের খাওয়াদাওয়াও শুদ্ধ হওয়া দরকার l সত্যযুগে তোমরা তো ৩৬ প্রকারের ভোজন করবে l কিন্তু এখানে তোমাদের সাধারণ ভাবে থাকতে হবে l না অনেক উঁচু না অনেক নীচু অর্থাত্ সাধারণ ভাবে l সমস্ত কথাতেই তোমাদের সহ্যশক্তি বা সহনশীলতা থাকা দরকার l তোমাদের নিন্দা - স্তুতি, জয় - পরাজয়, গরম - ঠান্ডা যে কোনো পরিস্থিতিই সহ্য করতে হবে l এখন সময়ই এমন l এরপর জল পাওয়া যাবে না, অনেককিছুই পাওয়া যাবে না, সূর্য্যের তেজও বাড়তে থাকবে l সমস্ত জিনিসই ধীরে ধীরে তমোপ্রধান হয়ে যায় l এই সৃষ্টিও সম্পূর্ণ তমোপ্রধান l তত্বও তমোপ্রধান হয়ে গেছে l তাই এই তমোপ্রধান দুনিয়া সকলকেই দুঃখ দেয় l তোমরা নিন্দা-স্তুতি কোনোকিছুতেই থেক না l অনেকেই এই বিষয়ে প্রভাবিত হয়ে যায় l অনেকেই আছে যারা অন্যকে উল্টো পাল্টা কথা ব'লে বিশৃঙ্খল অবস্থার সৃষ্টি করে , কারণ আজকাল তো বানিয়ে বানিয়ে অনেকেই অনেক কিছু বলে l যেমন , কেউ যদি বলে যে বাবা তোমার সম্পর্কে বলেছে- এর অনেক দেহ অভিমান আছে , বাইরে কেবল দেখনদারি , এই কথা শুনতে পেলেই সে উত্তপ্ত হয়ে উঠবে , ঘুমও চলে যাবে l অর্ধেক কল্পে মানুষ এমন থাকে, কারোর থেকে খারাপ কিছু শুনলেই তার উপর প্রভাব পড়ে, তার মনও খারাপ হয়ে যায় l তাই বাবা বলেন যে, তোমরা এমন ধরনের কথা শুনো না l শিববাবা কখনোই কারোর নিন্দা করেন না l বাবা তোমাদের বোঝানোর জন্যই এই কথা বলেন l উল্টো পাল্টা কথা একে অন্যকে শোনালে ভালো ভালো বাচ্চারাও খারাপ হয়ে যেতে পারে l তখন তারা বিশ্বাসঘাতক হয়ে বাজে কথা একে অপরকে শোনায় l ভক্তিমার্গেও এমন অনেক কাহিনী আছে l এখন তোমরা যখন জ্ঞান প্রাপ্ত করেছো তখন হে রাম বা হে ভগবান বলে দুঃখ করো না কারণ এই ধরনের অক্ষর ভক্তিমার্গের l তোমাদের মুখ থেকে এই ধরনের দুঃখের হা-হুতাশ বেরনো উচিত নয় l বাবা কেবল বলেন , "আদরের মিষ্টি বাচ্চারা, তোমরা আত্ম অভিমানী হও l" বাবা কত ভালোবেসে তোমাদের বুঝিয়ে বলেন যে, তোমরা কারোর কোনো বাজে কথা শুনো না l অনর্থক পরচিন্তনও করো না l এই কথা তোমরা নিশ্চয় করে নাও , আমরা হলাম আত্মা l আত্মা হ'লো অবিনাশী আর এই শরীর হলো বিনাশী l সমস্ত সংস্কার আত্মাই ধারণ করে l এখন তোমাদের বাচ্চাদের আত্ম অভিমানী হতে হবে l সেই দ্বাপর যুগে রাবণ রাজ্যের শুরু থেকে তোমরা দেহ অভিমানী হতে শুরু করেছ , তাই দেহী অভিমানী স্থিতি তৈরী করতে তোমাদের অনেক পরিশ্রম করতে হয় l প্রতি মূহুর্তে তোমরা বুদ্ধিতে আনবে যে তোমরা বেহদের শিববাবাকে পেয়েছো l কল্পে কল্পে বাবা এসে তোমাদের বর্ষা বা সম্পত্তির অধিকারী করেন l তাই এখন বাবার মতেই তোমাদের চলা উচিত l শিব বাবার জন্যই এই গান আছে যে, তুমি মাতা - পিতা ......, বাবাই তোমাদের সব সম্বন্ধের সুখ দেন l তার থেকেই তোমরা সর্ব সম্বন্ধের মিষ্টতা অনুভব করো l বাকি এই পৃথিবীর মিত্র -সম্বন্ধীরা তো অনেক সময় দুঃখও দেয় l এক শিববাবাই সকলকে সুখ দেন l তিনি খুব সহজ করে তোমাদের বলেন যে, তোমরা নিজেদের আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করো l বাবা বলেন যে এ কোনো নতুন কথা নয় l তোমরা জানো যে প্রতি ৫০০০ বছর অন্তর তোমরা শিববাবার কাছে আসো, বাবা কোনো সাধু সন্ত নন l তোমরা কোনো সাধু সন্তর কাছে আসো না l হ্যাঁ, বাবা তোমাদের এই কথা বলেন যে প্রবৃত্তিমার্গের সমস্ত সম্বন্ধ থেকে মোহ দূর করে যাবতীয় কর্তব্য পালন করো l না হলে তোমরা আরো অশান্ত হয়ে পড়বে তাই যুক্তির সঙ্গে চলো l প্রত্যেক মানুষকে ভালোবেসে বুঝিয়ে বলতে হবে যে, এখন বিনাশের সময় খুব ই কাছে এসে গেছে, এই আসুরী দুনিয়া শেষ হয়ে যাবে l এখন তোমাদের দেবতা হতে হবে তাই দৈবী গুণও ধারণ করতে হবে l এই সব কথাই ভালোবেসে বুঝিয়ে বলতে হবে l কোনো দেবতারাই পিঁয়াজ বা রসুন খান না l তোমরাও মানুষ থেকে দেবতা হতে যাচ্ছ তাহলে তোমাদেরও এই খাবার খাওয়া উচিত নয় l বাবা তোমাদের এই রায় দেন যে তোমরাও এমন জিনিস খেয়ো না, ছেড়ে দাও l এখন তোমরা বেহদের শিববাবাকে পেয়েছো, যিনি তোমাদের দৈবী গুণ ধারণ করতে শেখান,তাই তোমাদের সর্বগুণ সম্পন্ন হতে হবে l সর্বগুণ সম্পন্ন হতে পারলেই তোমরা নতুন দুনিয়ায় যেতে পারবে l এটা এমনই, যেমন রাতের পর নতুন দিন আসে l তাই এই কলিযুগীয় রাতের শেষেই তোমাদের দৈবী গুণ ধারণ করতে হবে,তাহলেই সত্যযুগীয় নতুন প্রভাতের উদয় হবে l তোমাদের নিজেদের পরীক্ষা প্রত্যেককে নিজেদেরই নিতে হবে l এমন নয় যে বাবা সবকিছুই জানেন l তোমরা নিজেদের দেখো l ছাত্ররা তো কখনো এই কথা বলবে না যে শিক্ষক আমদের সম্বন্ধে সবকিছু জানেন l পরীক্ষার সময় এসে গেলে ছাত্ররা নিজেরাই বুঝতে পারে যে তারা কতো নম্বর পেয়ে পাস করতে পারে বা কোন্ বিষয়ে তারা কাঁচা l এও তারা অনেকসময় বোঝে যে কম নম্বর পেলেও আমরা সমস্ত বিষয় নিয়ে পাস করে যাবো l এই কথা বুঝলে অবশ্যই নিজেদের পরীক্ষা করতে হবে যে , তোমাদের মধ্যে কোথায় কমতি আছে ? দেখতে হবে তোমরা ব্যবহারে কি মধুরতা এনেছ ? সবাইকে আদর করে ভালোবেসে বোঝাতে হবে .....আমাদের আত্মাদের বাবা পরমপিতা পরমাত্মা শিব l কোনো মানুষ নয়, আমরা নিরাকারকেই ভগবান বলি, ভগবান শিববাবাই হলেন রচয়িতা আর বাকি সবই রচনা l রচনা থেকে কেউই বর্ষা বা সম্পত্তি পায় না, সংস্কারও নয় l এখন সমস্ত রচনার সদগতিদাতা একমাত্র রচয়িতা শিববাবা, সমস্ত সাধুসন্তও তার কাছেই সদ্গতির জন্য আসে l আসলে সকলেই আত্মা l হ্যাঁ, মানুষ ভালো বা খারাপ দুইই হয়, তাদের আবস্থাও উঁচু নীচু হয় l সন্ন্যাসীদের মধ্যেও ক্রমানুসারে নম্বরবিশিষ্ট হয় l কোনো কোনো সন্ন্যাসী দেখো ভিক্ষা করে, আবার মানুষ কোনো কোনো সন্ন্যাসীদের পায়ে পড়ে l তোমাদের বাচ্চাদেরও অনেক উঁচু, মহান আর মধুর হতে হবে l কখনো ক্রোধ ক'রো না, যতটা পারো মধুর বচন বলো l তোমরা বলো তোমাদের সন্তানরা তোমাদের বিরক্ত করে কিন্তু এখনকার সন্তানরা এমনই হয় l তাদের তোমরা ভালোবেসে বোঝাও l গল্পে দেখানো হয় যে কৃষ্ণ দুষ্টুমি করলে তার মা তাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখতো l যতটা পারো তোমরা ভালোবেসে বুঝিয়ে বলো নাহলে হালকা সাজা দাও l এখন সকলের বিবেচনা অজ্ঞান অবস্থায় আছে কারণ এখন সময়ই এমন l বাইরের সঙ্গদোষ খুবই খারাপ l এখন বেহদের শিববাবা তোমাদের বলছেন, তোমাদের মূর্তি রাখার কোনো প্রয়োজন নেই l ঈশ্বরকে পেতে কোনো পরিশ্রম করারও দরকার নেই l শিবের ছবি রাখারও তেমন প্রয়োজন নেই l শিব হলেন তোমাদের বাবা l বাচ্চারা বাবার ছবি ঘরে কেন রাখবে ? বাবা তো সবসময়ই তোমাদের জন্য হাজির l বাবা বলেন, আমি এখন সবসময় তোমাদের জন্য হাজির l তাই ছবি রাখার খুব দরকার নেই l আমি এসে বাচ্চাদের বুঝিয়ে বলি l সবাই বলে বাপদাদাকে একসঙ্গে দেখো l এখন বাবা হলেন নিরাকার, তাঁকে তো তোমরা দেখতে পাবে না l বুদ্ধি দিয়ে তোমরা বাবাকে বুঝতে পারবে lবাবা বলেন যে আমি এই ব্রহ্মার মধ্যে প্রবেশ করে তোমাদের এই জ্ঞান দান করি l না হলে আমি কেমন করে আসব l কৃষ্ণের শরীরেও আমি আসি না আর সন্ন্যাসীদের মধ্যেও আমি আসি না l আমি তাঁর মধ্যেই প্রবেশ করি যিনি শ্রেষ্ঠত্বের প্রথম আসনে থাকেন l তিনিই এখন শেষ নম্বরে অর্থাত্ ৮৪ জন্মের চক্র সম্পূর্ণ করেছেন l তোমাদেরও এখন এই জ্ঞানের পড়া পড়ে প্রথম সারিতে যেতে হবে l তোমাদের পড়ান তো একজনই তাঁকেই জ্ঞানের সাগর শিববাবা বলা হয় l তোমরা তাঁর থেকে এই সুন্দর জ্ঞান লাভ করো l তোমরা জানো যে শান্তিধাম তোমাদের ঘর আর সুখধাম হলো তোমাদের রাজধানী l আবার এই দুঃখধাম হলো রাবণের রাজত্ব l এখন বাবা তোমাদের বলেন যে, মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চারা -তোমাদের ঘর শান্তিধামকে স্মরণ করো আবার তোমরা তোমাদের রাজধানী সুখধামকেও স্মরণ করো l এই দুঃখধামের বন্ধনকে এবার ভুলে যাও l এইভাবে তোমাদের না কেউ বলতে পারে l না কেউ যেতে পারে l এই বিশ্বনাটকের মাঝখান থেকে কেউই ফিরে যেতে পারবে না l মানুষ যেমন বলে অমুকের মৃত্যুর পর আত্মা জ্যোতিতে মিলিয়ে গেল বা ভবসাগর পার ক'রে নির্বাণধামে চলে গেল , একজনও যায় না l তোমাদের সকলের বাবা অথবা মালিক এক পরমপিতা পরমাত্মা, সমস্ত প্রেমিকার একমাত্র প্রেমিক তিনিই l এই লৌকিক জগতে প্রেমিক প্রেমিকারা একে অপরকে স্মরণ করে, তাদের বুদ্ধিতে একে অপরের ছবি থাকে l তখন তারা একে অপরকে স্মরণ করে l তারা ভোজনের সময় বা অন্য কোনো সময়ও তারা একে অপরকে স্মরণ করে l তারা হলো এক জন্মের প্রেমিক প্রেমিকা l আর তোমরা হলে জন্মজন্মান্তরের প্রেমিকা কেবলমাত্র একজন প্রেমিকের l তোমাদের আর কিছুই করতে হবে না l তোমরা কেবলমাত্র এক বাবাকেই স্মরণ করো l লৌকিক জগতের প্রেমিক প্রেমিকার স্মৃতিতে তাদের একে অপরের ছবি চলে আসে l সেই ছবি চিন্তা করতে করতে তারা কাজ করার কথা ভুলে যায় l তারপর যখন সেই ছবি মন থেকে অদৃশ্য হয়, তখন তারা আবার কাজে মন দেয় l কিন্তু এখানে তা হয় না l এখানে তোমরা জানো যে আত্মাও বিন্দু এবং পরমাত্মাও বিন্দু l তোমাদের নিজেদের আত্মা মনে করে পরমাত্মাকে স্মরণ করতে হবে l এতেই সমস্ত পরিশ্রম, আর কেউই এই ধরনের অভ্যাস করে না l আত্মার জ্ঞান তোমরা পেয়েছো, আত্মাকে অনুভব করেছো, আর বাকি রইলো পরমাত্মা l তাঁর কথাও তোমরা জানো l শিববাবা এসে ব্রহ্মাবাবার ভ্রুকুটিতে অবস্থান করেন l তাঁর জায়গাও এইখানে l মানুষের মৃত্যুর পর আত্মা যে কোথা থেকে চলে যায়, বোঝাই যায় না l আত্মার মুখ্য স্থান হলো এই ভ্রুকুটি l বাবা বলেন, আমিও বিন্দু, আমি ব্রহ্মাবাবার এই ভ্রুকুটিতে অবস্থান করি l তোমরা জানতেও পারো না l ব্রহ্মা বাবা বলেন, বাবা তোমাদের বাচ্চাদের এই জ্ঞানের কথা শোনান, বাবা যে কথা তোমাদের শোনান, সে কথা ব্রহ্মা বাবাও শোনেন l এই বোঝানো হলো সঠিক বোঝানো l যারা দৈবী ধর্মের , তারা চট্ করে এই কথা বুঝে যাবে l এই রাজধানী এখন স্থাপন হচ্ছে l প্রথমে এই রাজধানী স্থাপনের কাজ হবে , তারপর এই পুরোনো দুনিয়ার বিনাশ হবে l এই কথা তোমাদের কোনো ধর্মস্থাপকই বলতে পারবে না l ধর্মস্থাপকরা কেবল নিজেদের ধর্ম স্থাপন করেন, তারপর ধীরে ধীরে সেই ধর্ম বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয় l এখানে যে যতটা পুরুষার্থ করবে, সেই হিসাবে তারা ভবিষ্যতে উঁচু পদও প্রাপ্ত করবে l তোমরা ভবিষ্যত ২১ জন্মের জন্য প্রালব্ধ এখানে বানিয়ে নাও তাই তোমাদের কতটা পুরুষার্থ করতে হবে এবং তা খুবই সহজ, আর এই যোগের পদ্ধতিও খুবই সহজ, যার দ্বারা তোমাদের বিকর্ম বিনাশ হয় l বাবা বলেন ...আমি তোমাদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে, প্রতি কল্পে আমিই এসে তোমাদের পবিত্র করি l স্বর্গে একজনও পতিত থাকে না l এই জ্ঞানও কতো সহজ, ৮৪ জন্মের চক্রও তোমরা কেমনভাবে ঘোর , এই জ্ঞানও তোমাদের বুদ্ধিতে আছে l তোমাদের নিশ্চিত থাকা উচিত যে তোমরাই এই ৮৪ জন্মের চক্র সম্পূর্ণ করেছ l এই নিশ্চয়ের মধ্যেই বিজয় নিহিত আছে l এমন নয় যে তোমাদের মধ্যে এই দ্বিধা এলো যে আদৌ আমরা ৮৪ জন্মের চক্র নিয়েছি কি না ? বা কিছু কিছু কম জন্ম নিয়েছি l তোমরা যদি ব্রাহ্মণ হও তাহলে তোমাদের নিশ্চয় থাকা উচিত্ যে চিরকাল তোমরাই এই ৮৪ জন্মচক্রের ভাগ্য পুরো ভুগেছ l এতো খুবই সহজ কথা l বাচ্চাদের বোঝানো হয়েছে যে এই সকল চিত্র দিব্যদৃষ্টির দ্বারা বাবা বানিয়েছেন l সংশোধনও করিয়েছেন l প্রথমে যখন ব্রহ্মাবাবা বেনারসে একান্তে থাকতেন তখন বসে বসে এই চক্র তিনি দেওয়ালের ওপরে ফুটিয়ে তুলতেন l তিনি কিছুই বুঝতে পারতেন না কিন্তু খুব খুশি হতেন l (((((যখন তাঁর সাক্ষাত্কার হতো তখন তিনি উড়তে থাকতেন l) কিন্তু এটা কি হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারতেন না l তোমরা জানো যে প্রথমে যে চিত্র তৈরী করা হয়েছিলো তা পরবর্তীকালে পরিবর্তিত হয়ে নতুন চিত্র তৈরী হয়েছে l এখনও নতুন নতুন চিত্র আগের কল্পের মতো তৈরী হচ্ছে l সিঁড়ির চিত্র তোমরা দেখো কতো সুন্দর l এই চিত্রের উপর বোঝানো খুবই সহজ l যারা দেরী করে আসবে তাদের আরো সহজভাবে বোঝানো যেতে পারে l এখন যারা নতুন নতুন আসছে, তারা ৭ দিনেই সমস্ত জ্ঞান বুঝে নিতে পারবে l তারা পুরনোদের থেকেও আগে এগিয়ে যেতে পারবে l কেউ কেউ আবার বলে, আগে এলে আরো ভালো হতো l তবে তোমরা এই নিয়ে চিন্তা করো না l আগে এসে তোমরা এখান থেকে যদি চলে যেতে তাহলে কি হতো ? দেরীতে যারা আসবে তারা অতি সহজেই এই আসন প্রাপ্ত করতে পারবে l তোমরা দেখ , যারা প্রথমে ছিলো তারা এখন অনেকেই নেই l তারা অনেকেই চলে গেছে l পরে তোমরা রেজাল্ট জানতে পারবে যে - কারা পাস করলো l যারা নতুন আসে তারা অতি সহজেই সেবাকাজে লেগে যায় l পুরোনোরা অনেকেই এত সেবাকাজ করে না l নতুন বাচ্চারা এই সেবা করে বাবার হৃদয়ে বিরাজ করতে পারে l পুরোনোরা অনেকেই চলে গেছে, তাই বাবা বলেন - যাদের সর্বোত্তম ব্রাহ্মণ কুলভূষণ বলা হয়, তাদের মধ্যেও কেউ কেউ আশ্চর্য হয়ে এই কথা শুনেছে, কিন্তু পরে তারাই চলে গেছে l যে গায়ন আছে, তাই এখন প্রত্যক্ষভাবে হচ্ছে l আচ্ছা l
মিষ্টি - মিষ্টি সিকিলধে বাচ্চাদের প্রতি মাতা - পিতা, বাপদাদার স্মরণ , ভালোবাসা এবং সুপ্রভাত l রুহানি বাবার রুহানি বাচ্চাদের নমস্কার l
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
1) নিজের বিচার নিজেকেই করতে হবে l নিজেকে দেখো যে তোমরা কতোখানি মধুর হতে পেরেছো? তোমাদের মধ্যে কি কি দূর্বলতা এখনও আছে ? সমস্ত দৈবীগুণ কি ধারণ করতে পেরেছো ? তোমাদের চালচলন দেবতাদের মত হতে হবে l আসুরী খাবারের অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে l
2) বাইরের জগতের""" কোনো অপ্রয়োজনীয় বা খারাপ কথা শুনো না বা বলো না l সহ্যশক্তি বা সহনশীলতা ধারণ করো l
বরদান :-
সমস্ত সংকল্প বা কর্মে সিদ্ধি বা সফলতা প্রাপ্ত করে সম্পূর্ণমূর্ত হও l
যখন সমর্থ সংকল্পের রচনা করবে তখনই সংকল্পের সিদ্ধি প্রাপ্ত করতে পারবে l যারা অনেক বেশী সংকল্প করে তারা সেইসব সংকল্পকে বাস্তবায়িত করতে পারে না, তাই খুব বেশী সংকল্প করলে তা শক্তিহীন হয়ে যায় l তাই সর্বপ্রথমে ব্যর্থ সংকল্প বন্ধ করো তখনই সফলতা প্রাপ্ত করতে পারবে আর সমস্ত কর্মে সফলতা প্রাপ্ত করার একমাত্র যুক্তি হলো .....কর্ম করার আগে এই কল্পের আদি, মধ্য এবং অন্তকে জেনে তারপর সমস্ত কর্ম করো l এর দ্বারাই সম্পূর্ণমূর্ত হতে পারবে l
স্লোগান :-
সঠিক সময়ে দুঃখ এবং প্রতারণার থেকে মুক্ত হয়ে সফল হওয়াই জ্ঞানী আত্মার লক্ষণ l