BK Murli 6 August 2016 Bengali
০৬-০৮-১৬ প্রাত: মুরলী ওম্ শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা - তোমরা তোমাদের যোগবলের দ্বারা এই পুরানো দুনিয়ার পরিবর্তন করে নতুন দুনিয়া বানাচ্ছ, তোমরা প্রকট হয়েছো এই রুহানি সেবাকাজের জন্য l "
প্রশ্ন :-
সত্যিকারের বিশ্বাসী পুরুষার্থী বাচ্চাদের চিহ্ন কি হবে ?
উত্তর :-
বিশ্বাসভাজন বাচ্চারা কখনো নিজেদের ভুলকে লুকাবে না l সঙ্গে সঙ্গে তাদের ভুলের কথা বাবাকে শোনাবে l এইসব বাচ্চারা খুবই নিরহংকারী হয়, তাদের বুদ্ধিতে সবসময় থাকে যে আমরা যেমন কর্ম করবো তেমন ফল পাবো l
2) তারা কোনোরকম সেবাবিরোধী কাজের কথা কখনো বলবে না l সবসময় নিজের সেবাকাজেই তারা লেগে থাকবে l তারা কারোর অপগুণ দেখে নিজেরা মাথা খারাপ করবে না বা বিরক্ত হবে না l
গীত :-
ধৈর্য ধর হে মানব ........
ওম্ শান্তি l
মিষ্টি--মিষ্টি রুহানি বাচ্চাদের রুহানি বাবা ধৈর্য ধরতে বলছেন l যেমন ভাবে লৌকিক বাবাও নিজের বাচ্চাদের ধৈর্য ধরতে বলেন l কোনো সন্তান অসুস্থ হয়ে পড়লে লৌকিক বাবা তাদের আশ্বাস বা ভরসা দেন l তোমাদেরও এই যে বিকারের অসুখের দুঃখের দিন বদলে সুখের দিন আসবে l লৌকিক বাবা লৌকিক ভরসা বা আশ্বাস দেন l আর ইনি হলেন বেহদের শিব বাবা l তিনি সন্তানদের বেহদের ধৈর্য্য প্রদান করেন l বাচ্চারা, এখন তোমাদের সুখের দিন আসছে l আর সামান্য কিছুদিনই আছে l এখন তোমরা বাবার স্মরণে থাকো এবং অন্যকেও বাবাকে স্মরণ করা শেখাও l কেননা তোমরাই হলে শিব শক্তি l শিব বাবার এই শক্তি সেনা আবার নতুন করে প্রকট হয়েছে l এই গোপীরাও হলেন আত্মা l এরা সবাই শিবের থেকে শক্তি গ্রহন করে l তোমরাও এই শক্তিগ্রহন করো l বাবা তোমাদের বুঝিয়ে বলেন যে এখানে কৃপা বা আশীর্বাদের কোনো কথা নেই l বাবার স্মরণে থেকে বাবার থেকে শক্তি গ্রহণ করো l এই স্মরণের দ্বারাই তোমাদের বিকর্ম বিনাশ হবে আর তোমরা শক্তিমান হতে পারবে l শিবের শক্তিসেনারা এতোখানি শক্তিমান ছিলো যে তারা পুরোনো দুনিয়াকে বদলে নতুন দুনিয়ার নির্মাণ করেছিলো l তোমরা জানো যে তোমরা এই যোগবলের দ্বারাই পুরোনো দুনিয়ার বদল করাও l আঙ্গুলের দ্বারাও মানুষ ওপরের দিকে দেখিয়ে ইশারা করে যে ভগবানকে বা আল্লাকে স্মরণ করো l বাচ্চারা এখন জানে যে .....বাবার এই স্মরণের দ্বারাই এই পাথরের পাহাড়রূপী পুরোনো দুনিয়া বদল হয়ে যাবে l এখন তোমরা পরীস্থান স্থাপন করছো l বাবা বাচ্চাদের বুঝিয়ে বলেন - তোমরা খুব প্রদর্শনী করো, এই প্রদর্শনী নিয়ে তোমরা অনেক পরিশ্রম করো,যে সময় পাও এই সেবা আরো ভালো করে শেখো l এতো খুবই সহজ l বাচ্চারা সব ধরনের শিক্ষাই প্রাপ্ত করে l প্রত্যেকের নিজেদের কর্মের হিসাব আছে l কন্যাদের কর্ম খুবই ভালো হয় l যে সব কন্যাদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে তারা বলে .....এইসময় আমরা যদি কুমারী কন্যা হতাম তাহলে আমাদের কোনো ধরনের বিঘ্ন থাকতো না, আমরা স্বাধীন হতাম l কুমারী কন্যারা তো সম্পূর্ণ স্বাধীন l কিন্তু অনেকেরই খারাপ সঙ্গের কারণে ক্ষতি হয়ে যায় l স্ত্রীদের পুরুষ আর বাচ্চাদের নিয়ে কতো শৃঙ্খল থাকে, নিয়ম কানুনেরও কতো বন্ধন থাকে l কিন্তু কুমারী কন্যাদের কোনো বন্ধন থাকে না l এখন বোম্বের কন্যারাও তৈরী হচ্ছে l তারা বলে যে .....আমাদের জায়গাকে আমরা নিজেরা সামলাবো l সবাই তাদের নিজেদের জায়গার জন্য কতো পরিশ্রম করে l কেউ বলে আমার গুজরাট , কেউ বলে আমার ইউ. পি........ কিন্তু তোমরা এখন স্বরাজ্য অধিকারী হচ্ছো, তাই আমি অমুক বা আমি অমুক প্রান্তরের এমন কথা যেন তোমাদের মধ্যে না থাকে l কারোর উপর তোমাদের ঈর্ষা যেন না থাকে l কারোর অপগুণ দেখে তোমাদের মাথা যেন খারাপ না হয় বা তোমরা যেন বিরক্ত না হও l নিজেদের দেখো যে তোমরা কতোজন আত্মাকে , কতোজন ভাই - বোনকে সুখের রাস্তা দেখিয়েছো l যদি তাদের রাস্তা না দেখাতে পারো তাহলে কোনো কাজই হবে না l তাহলে তোমরা বাবার হৃদয় আসনে বিরাজ করতে পারবে না l বাপদাদার হৃদয়ে বিরাজ করতে না পারলে তোমরা সিংহাসনের অধিকারীও হতে পারবে না l বাবা জানেন যে কোনো কোনো বাচ্চাদের সেবা করার অনেক শখ থাকে l তাদের দেহ অভিমান বলতে গেলে থাকেই না l আবার কেউ কেউ তো খুবই অহংকারী হয় l তারা ভাবে যে তারা নিজেকে নয় বাবাকে দয়া করেছে l কখনোই কারোর অপগুণকে তোমাদের দেখা চলবে না l অমুকে এমন , সে এমন এমন কাজ করে এই কথা বলাও চলবে না l আজকাল এমন অনেকে আছে যারা একে অপরের সেবার নিন্দা করে l অমুকে এই করছে , সেই করছে বলতে থাকে l আরে , তুমি তোমার কাজ করো l ব্রাহ্মণ বাচ্চাদের কাজই হলো সেবাকাজে লেগে থাকা l বাবা এখানে আছেন এবং বাবার কাছে সমস্ত খবর আসে l প্রত্যেকের আবস্থা সম্বন্ধে বাবা সচেতন l প্রত্যেকের সেবা দেখে বাবা তাদের মহিমাও করেন l বাচ্চাদের মধ্যে এই সেবার খুব শখ থাকা দরকার l এই ঈশ্বরীয় সেবা কাজের মাধ্যমে প্রত্যেকেরই নিজেদের কল্যাণ করতে হবে l লৌকিক জগতের কাজকর্ম , ব্যবসা ইত্যাদি তো জন্ম জন্মান্তর ধরে তোমরা করে আসছো l এই এই সেবা কাজ কোনো কোনো বিশেষ জনই করতে পারে l এই সেবার নিয়ম বাবা খুব সহজ ভাবে বুঝিয়ে বলেন l কোনদিনই তোমরা অপরের নিন্দা করো না l এমন নিন্দা কিন্তু অনেকেই করে l খুব বড় বড় মহারথীরাও এই মায়ার দ্বারা আক্রান্ত হয় l বাবাকে স্মরণ না করলে এই মায়া তোমাদের গ্রাস করবে l বাবাও বলেন -যেহেতু আমি সধারন মানুষের শরীরে আসি তাই অনেকেই চিনতে পারে না l ব্রহ্মাবাবাকেও তারা মত দেয় যে এমনভাবে বা এইভাবে করতে হবে l তারা এমন ভাবে যে বাবা কিছুমাত্র অন্য কিছু করলেই বিশ্বাসঘাতক হয়ে যাবে l তারা বাবাকেও নিজের মতামত জানায় l প্রবাদ আছে না যে ইঁদুর যখন হলুদের বস্তায় ঢোকে তখন সে নিজেকে কেউকেটা বা বড় ব্যবসায়ী বলে মনে করে l তাই এই ধরনের বাচ্চারা ভাবেই না যে তাদের ডিসসার্ভিস হয়ে যাচ্ছে l ভুল তো অনেকেরই হয়ে যায় l কখনো নিজের স্থিতি উপরে কখনো বা নীচে হয়ে যায় l প্রত্যেকেই তোমরা নিজের আবস্থাকে দেখো l যারা বিশ্বাসী বাচ্চা তারা নিজের আবস্থাকে দ্রুত বদলাতে পারে l আবার কেউ কেউ নিজের ভুলকে লুকিয়ে যায় l তাই এই কথাকে প্রকাশ করতে গেলে নিরহংকারী হওয়ার প্রয়োজন l এই সেবাকে এগিয়ে নেবার জন্য নিজেদের সচেষ্ট হতে হবে l সবসময় এই কথা খেয়াল রাখতে হবে .......যেমন কাজ আমরা করবো, আমাদের দেখে অন্যেরা অনুপ্রাণিত হবে l আমি যদি কারোর নিন্দা করি তবে আমাকে দেখে অন্যেরাও সেই কাজ করতে থাকবে l অনেকেরই এইসব কথা খেয়াল থাকে না l বাবা বুঝিয়ে বলেন যে .....তোমরা এখন সেবা কাজে লেগে যাও l না হলে পরবর্তীকালে অনেক পস্তাতে হবে l অনেক শত্রুও এখানে তৈরী হয় l
তোমরা এখন শূদ্র থেকে পরিবর্তিত হয়ে ব্রহ্মামুখ বংশাবলী ব্রাহ্মণ তৈরী হয়েছো l যাদের মধ্যে পাঁচ বিকার থাকে তারা আসুরী সম্প্রদায়ের হয় l আর তোমরা হলে দৈবী সম্প্রদায়ের l তোমরা দেবতা হওয়ার জন্য এই বিকারের উপর বিজয় পাওয়ার চেষ্টা করছো l এখানে তো কেউই দেবতা নয় l দেবতারা থাকে সত্যযুগে l তোমরা এখন দৈবী সম্প্রদায়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছো l করতে হবে l সমস্ত কাজকর্ম থেকে কিছুটা সময় বার করে তোমাদের এই সেবা কাজে সময় লাগাতে হবে l এমন নয় যে তোমরা বলবে যে সময় পাও না lতোমাদের বাচ্চাদের এখন সকলকে বোঝানোর জন্য সুযোগ মিলেছে l প্রদর্শনীতে গিয়ে তোমরা সকলকে বোঝাও l প্রদর্শনী আর মেলাতে সকলের অবস্থান সম্বন্ধে বোঝা যায় l প্রজেক্টর দিয়ে তো সকলকে বোঝানো যাবে না l সামনে বসে বোঝালে সকলেই বুঝতে পারবে l প্রদর্শনী বা মেলা খুবই ভালো জিনিস, সেখানে তোমরা লিখেও বোঝাতে পারো l এই প্রদর্শনী বা মেলার শখ তোমাদের থাকা চাই l রোজ যদি তোমরা পড়া অভ্যাস করো তাহলে তোমাদের এই নেশা বাড়তে থাকবে l যারা বন্ধনে থাকো, তারা যদি ঘরে বসেও বাবাকে স্মরণ করো তাহলেও তোমাদের বিকর্ম বিনাশ হবে l ঘরে বসেও বাবাকে স্মরণ করা খুবই ভালো l কিন্তু এই স্মরণ করাও বাচ্চাদের পক্ষে মাঝে মাঝে খুবই মুশকিল হয়ে পড়ে l যে বাবার থেকে তোমরা ২১ জন্মের বর্ষা বা স্বর্গের অধিকার পাও তাঁকেই তোমরা সঠিকভাবে স্মরণ করো না l খুব বড় বড় মহারথী যারা খুবই ভালো ভাষণ দিতে পারে তারাও অনেক সময় বাবাকে সঠিকভাবে স্মরণ করে না l তারা ভোরবেলাও ওঠে না l বা উঠলেও বাবার স্মরণে বসে ঝিমতে থাকে l বাবাকে স্মরণ করার জন্য এই ভোরের সময় খুবই ভালো l ভক্তিমার্গেও এই ভোরে উঠে ঈশ্বরকে স্মরণের প্রথা প্রচলিত l তবে ভক্তিমার্গে সবারই উতরতি কলা l আর এখানে তো সবই ওপরে ওঠার কথা l মায়া তোমাদের সামনে কতো বিঘ্ন এনে উপস্থিত করে l যদি তোমরা ভোরবেলা উঠে বাবাকে স্মরণ না করো তাহলে তোমাদের ধারণাও তৈরী হবে না আর তোমাদের বিকর্মও বিনাশ হবে না l বাকি মুরলী পড়া ......সে তো ছোটো বাচ্চারাও শিখে বুঝিয়ে দিতে পারে l তবে এই পড়া বড়দের জন্য l এই বিশ্ববিদ্যালয় কতো বড় l তোমাদের কে পড়ান .....এই নেশাও বাচ্চাদের থাকে না l মায়া যদি কাউকে ধোকা দেয়,তবে তাকে না দেখে নিজের সেবায় লেগে যাও l বাবার কাছে সব খবরই আসে l কেউ কেউ দেহ অভিমানে এসে অন্যকে দেখতে থাকে, তার কাজের ভুল ধরে, তাদের নিন্দা করে নিজের অমূল্য সময় নষ্ট করে l তোমাদের কাজই হলো এই সেবা করা l কোনো সমস্যা তৈরী হলে সমস্তকিছু বাবাকে সমর্পণ করো l পরচিন্তন কখনোই করো না l বাচ্চাদের দিন রাত এই সেবাতে লেগে থাকতে হবে l এটাই তোমাদের একমাত্র কাজ l প্রদর্শনীতে গিয়ে রোজ বোঝাও যে ইনি হলেন শিববাবা আর ইনি হলেন প্রজাপিতা ব্রহ্মা l আগের কল্পেও প্রজাপিতা ব্রহ্মার গায়ন আছে l প্রজাপিতা ব্রহ্মার দ্বারা এই মনুষ্য সৃষ্টির রচনা হয় l এমন নয় যে মানুষ এখানে একদমই ছিলো না l মনুষ্য সৃষ্টির রচনা অর্থাত্ মানুষকে কাঁটা থেকে ফুলে পরিণত করা l ব্রহ্মার দ্বারা যখন সৃষ্টির রচনা হয়, তখন এই সৃষ্টি নিশ্চই উপরে রচনা হয় না l ব্রহ্মা তো এখানেই আছেন l বাবা কতো সহজ করে এই কথা বুঝিয়ে বলেন l
বাবা বলেন যে অনেক জন্মের শেষে আমি এই শরীরে প্রবেশ করে মানুষকে দেবতায় পরিণত করি l তাই বাচ্চাদের এই সেবাতে রাত দিন পরিশ্রম করতে হবে l সমস্ত কাজ থেকে কিছু সময় বার করে তোমাদের এই সেবাতে লেগে যেতে হবে l এমন নয় যে তোমরা সময় পাও না lঅসুখ হলেও কি তোমরা বলবে যে সময় নেই পুরুষার্থ তোমাদের করতেই হবে l শুধুমাত্র প্রেরণা দিয়ে কিছুই হবে না l ভগবান প্রেরণা দিলেই কোনো কাজ হয় না , সেখানে মানুষের প্রেরণায় কি কাজ হবে l মানুষ ভাবে যে ভগবান কি না করতে পারে l মরা মানুষকেও বোধ হয় বাঁচাতে পারে l ভগবানকে তোমরা বলো যে, হে পতিত পাবন তুমি এসে আমাদের পতিত থেকে পবিত্র বানাও, এর থেকে দ্বিতীয় কোনো কথা হতেই পারে না l অল্প মানুষই কেবলমাত্র বলে যে মৃত মানুষকে জীবন্ত করে দাও l বাবা হলেন পতিত পাবন l ভারত একদিন সম্পূর্ণ পবিত্র ছিলো l বাবা বলেন যে .....আমি কল্পে কল্পে এসে তোমাদের পবিত্র বানাই l আবার মায়া এসে তোমাদের পতিত বানিয়ে দেয় l এখন আমি আবার এসেছি তোমাদের পবিত্র বানাতে l এ কতো সহজ সরল কথা l হাকিমেরা অনেক বড় রোগকে জরি - বুটি দিয়ে ঠিক করে দেয় তখন তাদেরও খুব মহিমা হয় l আবার কেউ কেউ সন্তান লাভ করলে বা ধন প্রাপ্ত করলে বলতে থাকে যে গুরু কৃপা করেছেন l বাচ্চা মরে গেলেও মানুষ ভাবে যে এ আমার ভাগ্যে ছিলো l এই সব কথা এখন তোমরা বাচ্চারা বুঝতে পার l সন্ন্যাসীরা পবিত্র জীবন যাপন করেন, তাই মানুষ তাঁদের খুব সম্মান করে l কিন্তু অনেকেই হঠযোগী আছেন, তারা রাজযোগ শেখাতেই পারেন না l তাঁরা সন্ন্যাসী আর তোমরা হলে গৃহস্থী তাই তোমাদের সন্ন্যাসীদের অনুসরণকারী বলা যাবে না l বাবা বাচ্চাদের বলেন তোমাদের সম্পূর্ণভাবে বাবার কথাকে মানতে হবে অর্থাত্ .....মনমনাভব l অর্থাত্ আমাকে স্মরণ করো, তাহলে তোমরা পবিত্র হতে পারবে আর আমার সাথে যেতে পারবে l আমি তো সবসময় পবিত্র l মানুষ পতিত হয় আর আমি এসে তোমাদের পবিত্র বানাই l বাবা হলেন পবিত্রতা, সুখ আর শান্তির সাগর l তোমাদেরও এমনই হতে হবে l তোমরা যোগবলের দ্বারাই আত্মাকে পবিত্র বানাও l তোমরা জানো যে তোমরা সুদর্শন শরীর এবং নীরোগ শরীর প্রাপ্ত করবে l মানুষকে সত্যিকারের দেবতা হতে হবে l কেবলমাত্র দেবতাদের জামাকাপড় পড়লেই হবে না নিজের উপর পুরো নজর দিতে হবে l তোমাদের দেহ - অভিমান যেন না আসে l মনে যেন এই ভাব থাকে যে বাবা আমরা তো তোমার থেকে বর্ষা বা স্বর্গের অধিকার নিয়েই ছাড়ব l তোমরাও বল যে , আমরা ভারতকে শ্রেষ্ঠ আচরণ সম্পন্ন দুনিয়া বানিয়েই ছাড়বো l যারা নিশ্চতবুদ্ধিসম্পন্ন তারাই এই কাজ করতে পারবে l অনেকে আবার বলে যে এতো কম সময়ে এটা কি করে সম্ভব হবে l বাস্তবে কিন্তু তোমাদের এই সংশয় আনলে চলবে না l সংশয় এলে সেবা তোমরা ঠিকভাবে করতেই পারবে না l সময় কিন্তু খুবই অল্প আছে l তাই যতটা পারো তোমরা পুরুষার্থ করে নাও l সামান্য লড়াই বা হাঙ্গামা উপস্থিত হলে দেখো না কতো পরিশ্রম করতে হয় l তোমরা তো বুঝতে পারো .....আমরা যদি বাবার স্মরণে সম্পূর্ণ না থাকি তাহলে সেই লড়াই বা হাঙ্গামার সময় আমরা তো টানাপোড়েনে পড়ে যাব না ?l সেই সময় তো অনেক বিপদ আপদ উপস্তিত হবে তাই বাবা বলেন, এখন তোমাদের স্মরণের শক্তিকে বাড়িয়ে যাও l এ হলো আত্মাদের দৌড় প্রতিযোগিতা l বাবা কতো ভালো করে তোমাদের এইসব কথা বুঝিয়ে বলেন l তোমাদের লক্ষ্য বাবার ঘর পরমধামে গিয়ে আবার নতুন দুনিয়ায় চলে আসতে হবে l এ খুবই সুন্দর দৌড় প্রতিযোগিতা l বাবা বলেন যে.......আমাকে ছুঁয়ে অর্থাত্ মূলবতনে গিয়ে সঙ্গে সঙ্গেই তোমাদের নতুন দুনিয়ায় চলে আসতে হবে l যারা যোগযুক্ত থাকবে তারাই প্রথমের দিকে আসবে l সবাই চায় মুক্তিধামে যেতে l বাবা বলেন যে আমাকে স্মরণ করলেই তোমরা সেখানে যেতে পারবে l মুক্তিধাম তো সকলেরই পছন্দ, তারপর তোমরা সকলেই আসবে এই দুনিয়ায় অভিনয় করতে l কেউই মোক্ষলাভ করে না l ঈশ্বরীয় ইতিহাসে মোক্ষ নামের কোনো শব্দ নেই l তোমরা এক সেকেন্ডে জীবনমুক্তি পাবে আর বাকি সবাই মুক্তিধামে চলে যাবে l এই রাবণরাজ্য থেকে তোমাদের মুক্তি পেতেই হবে আর যারা পুরুষার্থ করবে তারাই উঁচু পদ পাবে l তোমাদের বাচ্চাদের খুবই মধুর হতে হবে l তোমাদের স্বভাব খুবই মিষ্টি হতে হবে l তোমরা কিন্তু দুর্বাসার মতো ক্রোধী হবে না l রাজঋষিদের মধ্যে অনেকেই এমন ক্রোধী ছিলেন l সবসময় নিজের মনকে প্রশ্ন করো যে আমি কি করছি l আমি যে কাজ করছি তাতে আমি কি পদ প্রাপ্ত করতে পারবো l যদি তোমরা সেবা না করো বা নিজের মতো অন্যকে না বানাও তবে তোমরা কি পদ প্রাপ্ত করবে l অল্পেই তোমরা খুশী হবে না l বাবা বলেন যে .....আমি এসেছি বাচ্চাদের সম্পূর্ণ বাদশাহী দিতে l তাই নিজেদের মধ্যে সাহস রেখে সব কাজ তোমাদের করে দেখাতে হবে l শুধু মুখে বললেই তো আর কিছু হবে না l বাবার এই সেবাকাজে তোমাদের অস্থির ও বলিদান দিতে হবে l তোমরা চেষ্টা করো কিন্তু মাঝে মাঝে দেহঅভিমান আসার কারণে জাগতিক নেশা এসে যায় আর তোমাদের পতন হয় l মায়াও কিন্তু কম শক্তিশালী নয় l বাবার শ্রীমতে না চললেই মায়া তোমাদের আক্রমণ করবে আর তখন তোমরা বাবাকেই ছেড়ে দেবে l বাবা তোমাদের সুখধামের মালিক বানান, তাই তোমাদের নিজের উপর দয়া আসা উচিত l বাবা খুবই সাধারণ রায় দেন l মায়ার তুফান তো তোমাদের উপর অনেক আসবে কিন্তু তোমাদের মহাবীর হয়ে থাকতে হবে l আচ্ছা l
মিষ্টি - মিষ্টি হারানিধি (সিকিলধে) বাচ্চাদের প্রতি মাতা -পিতা , বাপদাদার স্মরণ, ভালোবাসা আর সুপ্রভাত l রুহানি বাবার রুহানি বাচ্চাদের নমস্কার l
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
1) সেবা করার শখ মনে রেখে নিজের আর অপরের কল্যাণ করতে হবে l কারোর সেবা বিরোধী কাজের কথা তোমরা বলো না l পরচিন্তন করে নিজের সময় নষ্ট করো না l
2) বিশ্বাসী আর নিরহংকারী হয়ে সেবার কাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে l ভোরবেলা উঠে বাবাকে খুব ভালোবেসে স্মরণ করতে হবে l তোমাদের মুখের কথা আর কাজ যেন সমান হয় l
বরদান :-
জ্ঞান আর যোগের শক্তিশালী কিরণের দ্বারা পুরানো সংস্কাররূপী কীটানুদের ভস্ম করে মাষ্টার জ্ঞান সূর্য্য হও l
যে কোনো রকমের পতিত বায়ুমন্ডলকে বদলের জন্য বা পুরোনো সংস্কাররূপী কীটানুদের ভস্ম করার জন্য " আমি মাষ্টার জ্ঞান সূর্য " এই কথা সর্বদা স্মৃতিতে ধারণ করো l সূর্যের কর্তব্যই হলো আলো দেওয়া আর জীবাণুকে বিনাশ করা l তাই তোমাদের জ্ঞান আর যোগের শ্রেষ্ঠ পথে থেকে এই কর্তব্যই করে যেতে হবে l যদি তোমাদের শক্তি কম হয়ে যায় তাহলে এই জ্ঞান শুধুমাত্র আলো বিতরণ করবে কিন্তু পুরোনো সংস্কাvররূপী জীবাণুদের শেষ করতে পারবে না l তাই সর্বপ্রথমে যোগ আর তপস্যার দ্বারা শক্তিশালী হও l
স্লোগান :-
শুভ ভাবনা আর শুভ কামনার শ্রেষ্ঠ সংকল্পই তোমাদের জমার খাতা বাড়াতে থাকবে l